ফরাসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাতে কিলিয়ান এমবাপ্পে। গত রাতে পার্ক দে প্রিন্সেসে | রয়টার্স

খেলা ডেস্ক: ফ্রান্সের যেকোনো ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় পিএসজির শিরোপা জয় সাধারণ ব্যাপার। ক্লাবটির জন্য এসব প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হওয়াটাও যেন বড় ব্যর্থতা। দেশীয় প্রতিযোগিতায় দাপটের ধারাবাহিকতায় প্যারিসের ক্লাবটি জিতে নিয়েছে আরেকটি শিরোপা। গত রাতে তুলুজকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে ফরাসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (সুপার কাপ) ধরে রেখেছে পিএসজি।

ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে ম্যাচের ৩ মিনিটেই লি কাং ইনের গোলে এগিয়ে যায় পিএসজি। বিরতির আগেই ব্যবধান ২-০ করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২০২৩-২৪ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি এমবাপ্পের ২২তম গোল আর পিএসজির হয়ে ১৩তম শিরোপা।

সর্বশেষ গ্রীষ্মকালীন দলবদলের সময় এমবাপ্পেকে নিয়ে এত নাটক হয়েছে যে একসময় মনে হচ্ছিল, এই বুঝি তাঁর পিএসজি–অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। যেকোনো মুহূর্তে হয়তো রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা আল হিলালে যাওয়ার ঘোষণা দেবেন। 

তবে ২০২৩-২৪ মৌসুম শুরু হওয়ার কিছুদিন পর সেই নাটকের অবসান হয়েছে। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে শীতকালীন দলবদল শুরু হওয়ায় আবারও এমবাপ্পের পিএসজি ছাড়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

এ কারণেই কাল ম্যাচ শেষে ট্রফি জয়ের অনুভূতি জানার চেয়ে পিএসজিতে এমবাপ্পের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতেই সাংবাদিকেরা বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা ফরোয়ার্ড জানান, তিনি এখনো পিএসজিতে থাকা না থাকার ব্যাপারে মনস্থির করেননি, ‘আমি এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। নিজের পছন্দও ঠিক করিনি। এখানে আমার সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ নয়। সর্বশেষ গ্রীষ্মে সভাপতির (পিএসজি সভাপতি নাসের আল খেলাইফি) সঙ্গে আমার সে ধরনের চুক্তি হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে চলব এবং ক্লাবের প্রশান্তি (শৃঙ্খলা) বজায় রাখব। তাই আমি বলব, আমার সিদ্ধান্ত এখন গৌণ ব্যাপার।’

এ ধরনের কথা এমবাপ্পে আগেও বলেছেন। কিন্তু দলবদলের সময়সীমার শেষ দিকে গিয়ে নাটকের জন্ম দিয়েছেন। এবারও এমন করবেন কি না, সে প্রশ্নে এমবাপ্পের উত্তর, ‘এমনটা আমি ২০২২ সালের মে মাসের শেষ দিকে করেছি। কারণ, মে মাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু্ই জানতাম না। যদি আমি জানিই যে কী করতে চাই, তাহলে অপেক্ষা করছি কেন? এর কোনো মানে হয় না। যেমনটা আমি আগেও বলেছি, আমার কাছে এখন (পিএসজির হয়ে) শিরোপা জেতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই মাত্র (গত রাতে) একটি জিতলাম, আরও জেতার ব্যাপারে সংকল্পবদ্ধ। ক্লাবের ভেতরে আমরা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করি না। এটা নিয়ে কারও আগ্রহও নেই।’

পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নে রাজি না হওয়ায় গত আগস্টে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এমবাপ্পের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। একদিকে পিএসজি এমবাপ্পেকে বিক্রি করে দিতে উঠেপড়ে লাগে, অন্যদিকে মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি থেকে যেতে গোঁ ধরে থাকেন। কারণ, মেয়াদ পূর্ণ করার পর এমবাপ্পে চলে গেলে দলবদল থেকে একটি কানাকড়িও পাবে না পিএসজি। আর তিনি মেয়াদ পূর্ণ করে ক্লাব ছাড়লে ৮ কোটি ইউরো আনুগত্য বোনাসের পুরোটাই পাবেন। 

এ নিয়ে মনোমালিন্যের একপর্যায়ে এমবাপ্পেকে পিএসজির মূল স্কোয়াড থেকে ‘বম্ব স্কোয়াডে’ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষ বৈঠকে বসে সমঝোতার পর এমবাপ্পেকে পিএসজির মূল স্কোয়াডে ফেরানো হয়।