চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করা হয়। নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এর ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, নৌকার নয়, বরং পুলিশ কর্মকর্তার ভাইয়ের পরিচয় ব্যবহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম এলাকায় ভয়ভীতি ছড়ান।
নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আজ বুধবার এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মীর্জা শাহদাৎ খুররমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়েন কমিটির সদস্য সাবেক পৌর মেয়র কারিবুল হক।
এর আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়, তাঁদের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হচ্ছে। গত দুই দিনে অন্তত ১১টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। থানায় অভিযোগ করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আজ নৌকার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ট্রাক)। তিনি ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলামের ভাই। নজরুল ইসলাম প্রার্থী হওয়ার পরপরই তাঁর লোকজন নৌকার কর্মী-সমর্থক-ভোটারদের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। বিভিন্ন স্থানে রাতের বেলায় ‘ডিজে পার্টি’ ও ভূরিভোজ করা হয়েছে। ভোটের আগে শীতবস্ত্র বিতরণ ও কালোটাকা ছড়িয়েছেন ওই প্রার্থী। ভূরিভোজ করার জন্য নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছেন নজরুল ইসলামকে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নৌকার নয়, বরং ডিআইজি ভাই হওয়ার পরিচয় ব্যবহার করে নজরুল ইসলাম মানুষের মনে ভয়ভীতি ছড়ান। তিনি শিবগঞ্জে একটি অশান্ত পরিবেশ তৈরি করেন। তিনি সব সময় পুলিশি ক্ষমতা ব্যবহারের অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন।
এ সময় আরও অভিযোগ করা হয়, সৈয়দ নজরুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরাই নির্বাচনে ভরাডুবি আঁচ করতে পেরে নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের হরিনগর তাঁতিপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে নজরুল ইসলামের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো নিয়ে তারা থানায় মামলা করুক। পুলিশ তদন্তেই প্রমাণিত হবে ঘটনা সত্য না মিথ্যা।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মতিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোহিদুল আলম, দাইপুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর রেজা, চককীতি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিঞা ও বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামিল উদ্দিন। এ ছাড়া কামরুল আহসান মাস্টারসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।