রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক মো. শামসুদ্দিন রিন্টু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি এ আসনের নৌকার প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
সারা দেশে একে একে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার মধ্যে শামসুদ্দিনও শামিল হলেন। তবে রাজশাহী জেলার অন্য পাঁচটি আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা এখনো সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেননি।
শামসুদ্দিন তাঁর নির্বাচনী এলাকায় একটি পোস্টারও টাঙাননি। নির্বাচনী কোনো প্রচারেও নামেননি এত দিন। আজ বিকেলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, তিনি কর্মীদের আর ধরে রাখতে পারছিলেন না। তাঁর কর্মীরা তাঁর কাছে সিদ্ধান্ত চাচ্ছেন। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না। কেন্দ্র তাঁদের কোনো সহযোগিতা করেনি। পোস্টারও দেয়নি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন একটা উৎসব। কর্মীরা কেন এই উৎসব থেকে বঞ্চিত হবেন?’
শামসুদ্দিন নৌকার প্রার্থীকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থনের কথা জানিয়ে বলেন, রাজশাহী জেলার দলীয় ছয়জন প্রার্থী তাঁরা এক জায়গায় বসেছিলেন। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দলের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় রাজশাহী-২ (সদর) সদর আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জাতীয় পার্টির রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। সাইফুল ইসলাম বলেন, তাঁরা জেলা আহ্বায়ককে (শামসুদ্দিন) নির্বাচন থেকে আগেই সরে দাঁড়ানোর অনুমতি দিয়েছেন। তাঁরা বাকি পাঁচ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তিনি বলেন, লজ্জায় তাঁরা মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে পারছেন না। এখনো মাঠে আছেন। এর শেষ দেখে ছাড়বেন।
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী মো. শামসুদ্দীন তানোর উপজেলা জাতীয় পার্টির চারবারের সভাপতি। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা অভিনয়ের ‘মহারাজা’ সেজে মাঠে রয়েছেন। তাঁরা নাটকে আছেন। জি এম কাদের যেমন নাটক করে ২৬টি আসন নিয়ে নিলেন। শামসুদ্দীন বলেন, দলটা যখন গঠিত, তখন থেকে তিনি এর সঙ্গে রয়েছেন। ছাড়তে পারেননি। তাঁর শখও ছিল যে তিনি এমপি প্রার্থী হবেন। তাই কর্মীদের মাইক্রোবাস ভাড়া করে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি ধান বিক্রি করে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। শুধু ধানই বিক্রি করেননি, ১৬ বিঘা জমিতে আলু চাষ করার জন্য বীজ রেখেছিলেন, সেই বীজ বিক্রি করে দিয়েছেন। জমিও ইজারা দিয়েছেন। এসব করে নির্বাচন করছেন।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী আবদুস সালাম খান। মোহনপুর উপজেলায় তাঁর কোনো পোস্টার চোখে পড়েনি। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সামর্থ্য অনুযায়ী বড় পোস্টার শুধু একবারই লাগিয়েছেন। আর ছোট পোস্টার বিলি করছেন। তিনি বলেন, পার্টির জেলার আহ্বায়ক সরে দাঁড়ালেও তিনি নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবেন।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী আবু তালেব প্রাং বলেন, ভাগ্যে যা আছে তাই হবে। তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী আবুল হোসেন এরশাদ সরকারের সময় জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রচার-প্রচারণাও একই রকম। তবে এবার তাঁর বাড়িতে পেট্রলবোমা হামলার অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, একটা প্রতীক তো পেয়েছেন। এই প্রতীক নিয়ে মানুষের কাছে যেতে পারছেন, এই জন্যই প্রার্থী হয়েছেন। দাঁড়িয়ে আছেন। বিজয়ের আশা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ ভোট দিলে তিনি জিতবেন।