দেশে অব্যাহত নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে দেয়ালে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আঁকেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার কর্মীরা। ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বরের চিত্র | ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৩ সালে রাজশাহীতে ২৫ নারী ধর্ষণ, যৌতুকের জন্য ৬০ জন এবং নানা কারণে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৬ জন। একই সময়ে গাজীপুরে ৩৪ নারী ধর্ষণ এবং নানা কারণে ৪৩ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘যৌন হয়রানি ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে আইনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়।

মানবাধিকার ও আইন সহায়তা প্রদানকারী সংগঠনটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অগ্নি নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের অধীনে রাজশাহী ও গাজীপুর জেলায় বিশেষ করে পরিবহন, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যৌন হয়রানি এবং জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ করে জেন্ডার সমতায়নের লক্ষ্যে সুশীল সমাজের ১৪টি সংগঠনসহ সরকারি-বেসরকারি কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেখানেই এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

আসকের প্রকল্প সমন্বয়কারী আসমা খানম বলেন, শিক্ষাঙ্গনে শিশুদের ও কর্মস্থলে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উচ্চ আদালতের মাইলফলক রায়ের এক যুগ পার হয়ে গেছে। রায়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নির্দিষ্ট আইনে রূপান্তর না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ী এ নির্দেশনা আইন হিসেবে কাজ করার কথা থাকলেও প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

পরে অগ্নি প্রকল্পের দুই কর্ম এলাকা রাজশাহী ও গাজীপুরের গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নারীর প্রতি সহিংসতার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর রাজশাহীতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৫ নারী, যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৫ নারী; যৌতুকের জন্য ৬০ জন আর পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৬ জন নারী। এ ছাড়া সালিস ও ফতোয়ার মাধ্যমে দুজন নারী নির্যাতিত হয়েছেন এই জেলায়। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর গাজীপুরে ৩৪ নারী ধর্ষণ ও ধর্ষণসংক্রান্ত সহিংসতার শিকার হয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪৩ জন নারী।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আসকের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল। আসকের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির সভা সঞ্চালনা করেন।