টাকার বিনিময়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে পাবনার ঈশ্বরদী জংসন স্টেশনের ওয়াশপিটে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে আগুন দিয়েছিলেন বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘টাকার বিনিময়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের ওয়াশপিটে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে আগুন দিয়েছিলেন বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। আর এ ঘটনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি স্থানীয় বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর আপন দুই ভাই জড়িত।’
ঘটনার পর পুলিশের অভিযানে আটক বিএনপি কর্মী সুমন হোসেন (৩২) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এমন তথ্য জানিয়েছেন পুলিশকে। আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ হন সুমন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য তুলে ধরেন।
বুধবার বিকেলে ঈশ্বরদীর ফতেমোহম্মদপুর রেলওয়ে হাসপাতালের সামনে থেকে বিএনপিকর্মী সুমনকে আটক করে পুলিশ। আটক সুমন ঈশ্বরদী পৌর এলাকার রহিমপুর গার্লস স্কুল মহল্লার তাইজুল ইসলামের ছেলে।
ট্রেনে আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ হয় সুমন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, গত ২৭ নভেম্বর রাতে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা অবরোধ চলাকালে ঈশ্বরদী রেল জংশন এলাকার ওয়াশপিটে দাঁড়িয়ে থাকা (সিক্স ডাউন) ট্রেনে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় রেলওয়ে থানায় মামলা দায়েরের পর অভিযানে নামে পুলিশের একাধিক দল।
এ সময় ট্রেনে আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ সুমন বাসা থেকে ওষুধ কিনতে আসলে সেই সূত্র ধরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার সুমনের দেওয়া তথ্য সূত্রে ট্রেনে আগুন দেয়ার রহস্য বেরিয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা সুমন স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার বলেন, অর্থের বিনিময়ে ট্রেনে আগুন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাকারিয়া পিন্টুর আপন দুই ভাই। তারা হলেন, ঈশ্বরদী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান ও পৌর যুব দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল।
জাকির হোসেন জুয়েল (বাঁ থেকে) ও মেহেদী হাসান | ছবি: সংগৃহীত |
এই ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তারা হলেন, ঈশ্বরদী পৌর সদরের শৈলপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহীন হোসেন, একই এলাকার মৃত ফরিদ হোসেনের ছেলে পৌর যুবদলের সদস্য রুবেল হোসেন, মকলেছ হোসেনের ছেলে মামুন হোসেন ও রহিমপুর এলাকার রাসেল হোসেন। এ সকল আসামিসহ পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আটক সুমনকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, দুষ্কৃতকারীরা যাতে পুনরায় ট্রেনে আগুন দিতে না পারে, সেজন্য ঈশ্বরদী রেল জংশন এলাকায় অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থা, সিসিটিভি স্থাপন, সাদা ও পোশাকি পুলিশসহ আনসার সদস্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। একইসঙ্গে পুরো জংশন এলাকা নিরাপত্তার মধ্যে আনার জন্য চারপাশে কাটাতার স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও জাকির হোসেন জুয়েল ও মেহেদী হাসানকে পাওয়া যায়নি।