রাজশাহী জেলার মানচিত্র |
প্রতিনিধি বাগমারা: রাজশাহী–৪ (বাগমারা) আসনে ভবানীগঞ্জ গোডাউন মোড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর একটি নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্পে ভাঙচুর চালিয়েছেন দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন। পরের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পটি উদ্ধার করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন। বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ, জাপার আবু তালেব প্রামাণিক, বিএনএমের সাইফুল ইসলাম (রায়হান), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির জিন্নাতুল ইসলাম, স্বতন্ত্র এনামুল হক ও বাবুল হোসেন। তাঁদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য এনামুল হক দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে তাঁর প্রতীক কাঁচি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতীক বরাদ্দের পর গত সোমবার দুপুরে ভবানীগঞ্জ গোডাউন মোড়ে পুরোনো শহীদ মিনারের সামনে ফাঁকা স্থানে নৌকার প্রার্থীর লোকজন একটি নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করেন। সন্ধ্যার পর নৌকার সমর্থক বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন সরকারের নেতৃত্বে কিছু সমর্থক সেখানে বসে ছিলেন। রাত আটটার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সমর্থকদের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নৌকার সমর্থকেরা টিকতে না পেরে চলে যান। এ সময় নৌকার ওই ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন।
পরের দিন মঙ্গলবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন ওই নির্বাচনী ক্যাম্প দখলে নিয়ে সেখানে নিজেদের কাঁচি প্রতীকের ব্যানার ও পোস্টার টাঙিয়ে দখলে নেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে আসে নৌকার একদল সমর্থক। এ সময় তাঁরা ওই ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় সেখানে অবস্থান করা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা পালিয়ে যান। পরে নৌকার সমর্থকেরা ভবানীগঞ্জ এলাকায় মিছিল ও পথসভা করেন। উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ বুধবার বিকেলে সরেজমিনে ওই নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাঙচুরের দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে নতুন করে কোনো ক্যাম্প করা হয়নি। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, তাঁদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প দখল করতে গেলেন কেন, এমন প্রশ্নে কোনো জবাব দেননি আসাদুজ্জামান।
তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মাহাবুর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পটি আমাদের ছিল, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেকের নেতৃত্বে সেখানে ভাঙচুর করে দখলে নিয়েছেন। এনামুল হক শুরু থেকে তাঁদের লোকজনের ওপর হামলা করে যাচ্ছেন।’
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, বিষয়টি পুলিশ জানে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।