আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে মাছ লুটের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন অনিল কুমার।শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ। তাঁর কর্মীদের বিরুদ্ধে ইজারা নেওয়া বিলের মাছ লুটের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বিল ইজারা গ্রহণকারী সমিতির সভাপতি অনিল কুমার শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তুলে ধরেছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অনিল কুমার বলেন, তাঁদের মৎস্যজীবী সমিতির নাম বড়দেওপুর মেলান্দি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ৩৭ একর এই বিল গত বছর প্রায় আট লাখ টাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাঁরা এ সমিতির নামে ছয় বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন। এই বিলেরই প্রায় চার লাখ টাকার মাছ লুট করে নেওয়া হয়েছে।

অনিল জানান, তাঁরা এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের সমর্থক। ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নেই সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বাড়ি। এবার সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তাঁর কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে আসাদুজ্জামানের ৫০-৬০ জন কর্মী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিল থেকে জোর করে মাছ মেরে নিয়ে যান। পরে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করলে পুলিশ আসে। তবে এর আগেই তাঁরা পালিয়ে গেছেন। পরে থানায় গিয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অনিল আরও অভিযোগ করেন, আসাদুজ্জামানের সমর্থক আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। আফজাল ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আফজাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নৌকার সমর্থকেরা এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁরা কেউ ওই সব কাজে যায়নি।’ তিনি বলেন, ‘এবার নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামানের কড়া নির্দেশনা রয়েছে, তাঁর সমর্থকেরা কেউ যেন এ ধরনের লুটপাট বা সন্ত্রাসী কাজে না যান। সবাই তাঁর নির্দেশনা মেনে চলছেন।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যে অনিল সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁকে চার আনা ভাগ দিয়ে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের আত্মীয়স্বজন ১০ বছর ধরে বিলটি ইজারা নিয়ে খাচ্ছেন। তাঁরা প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বিলের পানিতে পা দিতে দেন না। তাঁরাই মাছ মেরে নৌকার সমর্থকদের নামে অভিযোগ করছেন।’ আফজাল এলাকায় গিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুজ্জামানের বক্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হরিদাস মণ্ডল বলেন, ‘মাছ লুটের একটি অভিযোগ থানায় এসেছে। মৎস্যজীবী সমিতি বিলের ৩৭ একর ইজারা নিয়েছে, কিন্তু বর্ষার সময় বিলটা ছড়িয়ে যায়। সেই পানিতে সব ঢেকে আছে। এখন কোন ৩৭ একর ইজারা নেওয়া, সেটা তো আমরা বলতে পারব না। তদন্ত করে দেখা হবে।’