বগুড়ার শাজাহানপুরে বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন হক ফিলিং স্টেশনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দুপুরে উপজেলার বনানী এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার শাজাহানপুরে বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মোল্লার মালিকানাধীন একটি ফিলিং স্টেশনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে ফিলিং স্টেশনে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে হামলাকারীরা।

শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার বনানী মোড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের হক ফিলিং স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ এখনো হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি।

জিয়াউল হক মোল্লা বলেন, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার বনানী মোড়ে তাঁর পেট্রলপাম্পে হামলা করে অকটেন ও পেট্রল ভরার তিনটি যন্ত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় পেট্রলপাম্পে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ দ্রুত উপস্থিত হওয়ায় হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, সাত থেকে আট দুর্বৃত্ত পেট্রলপাম্পে হামলা করে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। তাদের শনাক্ত করা যায়নি। এ বিষয়ে এখনো মামলা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হামলা ও ভাঙচুরের পরে পেট্রলপাম্পে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। শনিবার বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বনানী এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এর আগে গত সোমবার বিকেলে কাহালু উপজেলার তিনদীঘি এলাকায় জিয়াউল হক মোল্লার ‘গণসংযোগে’ হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিএনপির স্থানীয় নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে জিয়াউল হকসহ মাসুদ ও হাসান নামে তাঁর দুই কর্মী আহত হন।

জিয়াউল হক মোল্লা বলেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের ক্যাডার বাহিনী তাঁকে হত্যার জন্য ওই হামলা করে। এ ঘটনায় ১২ ডিসেম্বর কাহালু থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউল হক মোল্লার বাবা আজিজুল হক মোল্লা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি মারা গেলে তাঁর ছেলে জিয়াউল হক মোল্লা উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে জয়ী হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনেও বিএনপির মনোনয়নে তিনি সংসদ সদস্য হন। পরে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হন।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে দলে সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হন জিয়াউল হক মোল্লা। এরপর বিএনপিতে তিনি ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাঁকে বাদ দিয়ে মোস্তফা আলীকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের খসড়া তালিকায় তিনি ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর বদলে মোশারফ হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।