নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সড়ক ও ফুটপাতের জায়গায় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের প্যান্ডেল। রোববার বিকেলে নাটোরের লালপুর ত্রিমোহনী এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরের লালপুরে সড়কের জায়গা দখল করে নির্বাচনী প্যান্ডেল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই জায়গায় প্যান্ডেল নির্মাণের আগে কয়েক ব্যক্তি জুতা সেলাইয়ের কাজ করতেন। তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।

প্যান্ডেল নির্মাণ করায় ওই জায়গা দিয়ে হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হচ্ছে পথচারীদের। জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণবিধিমালার ৬ বিধির ‘ঘ’ উপবিধিতে বলা আছে, জনগণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথ সভা করতে পারবেন না। তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিও অনুরূপভাবে জনসভা বা পথসভা ইত্যাদি করতে পারবেন না।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লালপুর ত্রিমোহনী চত্বরে কফিল উদ্দিন মার্কেটের সামনে ঈশ্বরদী-বাঘা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের ফুটপাতে বসে দীর্ঘদিন ধরে ১০ ব্যক্তি জুতা-স্যান্ডেল সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২৬ নভেম্বর বর্তমান সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে ওই জায়গা থেকে মুচিদের সরিয়ে দিয়ে সেখানে সংসদ সদস্যের সংবর্ধনা সভা করার জন্য প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়। সভা শেষ হলেও প্যান্ডেলটি সরানো হয়নি; বরং প্যান্ডেলটি ভোট গ্রহণের দিন পর্যন্ত রাখা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্যান্ডেলটি এখন নির্বাচনী প্যান্ডেল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আজ রোববার বিকেলে সেখানে গিয়ে প্যান্ডেলে একজন পুলিশ সদস্যকে বসে থাকতে দেখা যায়।

উচ্ছেদ হওয়া সঞ্জীব চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, তিনিসহ সেখানে সঞ্জয় কুমার দাস, তুলসী চন্দ্র দাস, রবিন চন্দ্র দাসসহ ১০ থেকে ১২ জন অস্থায়ী দোকান বসিয়ে কাজ করতেন। সংসদ সদস্যের নেতারা এসে সেখানে প্যান্ডেল করেছেন। এখন তাঁরা সংকীর্ণ জায়গায় বসেন। কিন্তু ওই জায়গায় কাজকর্ম হয় না। এতে তাঁরা চরম অর্থকষ্টে আছেন। তাঁরা প্যান্ডেলটি সরানোর জন্য লালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তিনি সমাধান করেননি।

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করা হলে এবং খুদে বার্তা পাঠানো হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে লালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে ফোন করা হলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্যান্ডেলের নিচের দুটি টেবিল সরিয়ে নেব। তবে নির্বাচন পর্যন্ত একটি টেবিল থাকবে।’ জুতার কারিগরদের বিষয়ে তিনি বলেন, মঞ্চের পাশে তাঁদের বসতে বলা হয়েছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা এ প্রসঙ্গে বলেন, আচরণবিধি মোতাবেক সড়ক-মহাসড়ক দখল করে নির্বাচনী প্যান্ডেল করার সুযোগ নেই। কেউ যদি করে থাকেন, তাহলে তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।