ভাঙ্গায় নিক্সন চৌধুরীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থকদের রান্না করা খিচুড়ি ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার রশিদপুর গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি ফরিদপুর: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে খিচুড়ি রান্না করছিলেন ফরিদপুর–৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনে নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থকেরা। কিন্তু বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের নামে স্লোগান দিয়ে তাঁর সমর্থকেরা সেই খিচুড়ি ফেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রশিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে নিক্সন চৌধুরীর অনুসারীরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নিক্সন চৌধুরী ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবং যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। অন্যদিকে কাজী জাফর উল্যাহ ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সংসদীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান। তাঁকে হারিয়ে টানা দুবার সংসদ সদস্য হন নিক্সন চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারও তিনি ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে এবারও নিক্সন চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
এলাকাবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থক ফিরোজ মাতুব্বরের বাড়িতে খিচুড়ি রান্না করছিলেন কর্মী-সমর্থকেরা। রান্না যখন শেষ পর্যায়ে, তখন ৫০ থেকে ৬০ জন লোক নিক্সনের পক্ষে স্লোগান দিতে দিতে রান্না শেষ হওয়া এক হাঁড়ি খিচুড়ি মাটিতে ফেলে দেন। এরপর স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা আবার চলে যান। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা বাধা দেননি বলে জানান স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতার বাড়িতে খিচুড়ি রান্না করা হচ্ছিল। এ সময় নিক্সনের সমর্থকেরা স্লোগান দিতে দিতে ওই বাড়িতে এসে খিচুড়ির হাঁড়ি উল্টিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে চলে যান। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা (কাজী জাফর) কোনো ঝামেলা করতে নিষেধ করেছেন। এ জন্য আমরা কোনো প্রতিরোধ করিনি।’
তবে নিক্সনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনসুর মুন্সী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রশিদপুর গ্রামে সন্ধ্যায় এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কেউ যদি এমন অভিযোগ করে থাকেন, তবে তিনি মিথ্যা বলেছেন।
খিচুড়ি ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আজ শনিবার থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ফিরোজ মাতুব্বর।
ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদ্যুৎ সরকার বলেন, এ ঘটনায় আজ ঘারুয়া ইউপির চেয়ারম্যান মনসুর মুন্সীসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করে দেখছে।