রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির | ফাইল ছবি

প্রতিনিধি কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর হাতির ডেবা আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৭) সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক রোহিঙ্গা তরুণের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রোহিঙ্গা তরুণের নাম মো. আবদুল্লাহ (২৩)। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের সি-৭৮ ব্লকের মোহাম্মদ আমিনের ছেলে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আশ্রয়শিবিরের সি-৭৮ ব্লকের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা সলিম উল্লাহ বলেন, সাত-আটজনের একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আবদুল্লাহকে ঘর থেকে ডেকে পাশের বাজার এলাকায় নিয়ে মারধর শুরু করে। এরপর দুটি গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ মাটিতে লুটে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। সন্ত্রাসীরা মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্য বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে জানান উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম হোসাইন। তিনি বলেন, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আবদুল্লাহকে ঘর থেকে ডেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সন্ত্রাসীরা মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য। তাদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, আশ্রয়শিবিরগুলোতে খুনোখুনির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গারাও আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা জানান, এর আগে ৬ ডিসেম্বর রাতে উখিয়ায় জামতলী আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর (আরসা-আরএসও) মধ্যে গোলাগুলিতে তিন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৬২টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৭৫ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ২২ জন আরসার সদস্য, ৫ জন আরএসওর সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক এবং অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।