নির্বাচনী প্রচারণায় মাহিয়া মাহি। গত বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌর এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার পালপাড়া এলাকায় নৌকাসমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা তাঁকে বাধা দেন বলে মাহির অভিযোগ। এ ঘটনায় তিনি রাতেই গোদাগাড়ী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তব্যে মাহিয়া মাহি বলেন, গতকাল রাতে গোদাগাড়ীর পালপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন তিনি। তিনি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ তাঁর বক্তব্যের মাঝখানে একজন এসে বলতে থাকেন, তিনি (মাহিয়া) করোনার সময় কী করেছেন? তখন তিনি বুঝতে পেরেছেন যে এটা বলার নির্দেশনা এসেছে কোথাও থেকে। এই কথা বলতে বলতে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি বলেন, এটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস। এই রাস্তায় তিনি গণসংযোগ করতে পারবেন না। এর জবাবে তিনি (মাহিয়া) বলেছেন, এটা সরকারি রাস্তা। কেন প্রচারণা করতে পারবেন না? তিনি তাঁকে বাধা দিচ্ছেন কেন?

মাহিয়া মাহি বলেন, তিনি তৎক্ষণাৎ প্রশাসনকে বিষয়টি জানানোর কথা ওই লোকগুলোকে বলেন। তখন লোকজন বলেন, তাঁরা ‘সরি’ বলছেন। তখন তিনি বলেন, সবার সামনে ‘সরি’ বললে মাফ করে দেবেন। ওই লোকগুলো ‘সরি’ বলবেনই না। পরে শেষে এসে ‘সরি’ বলেন।

মাহিয়া মাহি বলেন, দুই দিন আগে এক হাটে তিনি গণসংযোগে যান। অটোরিকশায় বসে থাকা এক নারী তাঁকে ডাকেন। পরে জানতে পারেন, তিনি ছিলেন যুব মহিলা লীগের একটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক। বারবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল, তিনি এলাকার জন্য কী করেছেন? করোনার সময় কী করেছেন। সেই ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।

মাহি বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে যে আমি যেখানে যাব, সেখানে সাধারণ জনগণ সেজেই তারা একটা বিশৃঙ্খলা করবে। আগের জন মহিলা লীগের নেত্রী, এই ছেলেটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। আমি ভীতসন্ত্রস্ত। কারণ, আর মাত্র কয়টা দিন আছে। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে কে কখন ঢুকে যাবে এবং বিশৃঙ্খলা করবে। তাই আমি প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই, তাঁরা যেন এদিকে খেয়াল রাখেন।’

এ বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, ঘটনার শোনার পর তিনি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা) ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। পরে রাতে মাহির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। তবে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নির্বাচনী আচরণবিধি ২০০৮–এর ৬ (ক) ধারা লঙ্ঘন হয়েছে। এই ধারার লঙ্ঘন হলে তিনি ১৭ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি বা কমিশনের কাছে অভিযোগ দিতে পারবেন। তাঁদের এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি নিরাপত্তা চেয়ে কোনো জিডি করেননি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন মাহিয়া মাহি। না পেয়ে রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী আবারও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। ওমর ফারুক চৌধুরী ও মাহিয়া মাহি ছাড়াও আরও নয়জন প্রার্থী রয়েছেন এ আসনে।

অভিযোগের বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীকে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।