বগুড়া জেলার মানচিত্র |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার ধুনট উপজেলার প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক সুবিধাভোগী সরকারি ভাতার টাকা হারাচ্ছেন। প্রতারক চক্র নানা কৌশলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে গত এক মাসে থানায় অন্তত ১৫টি জিডি হয়েছে। এর বাইরে অনেকে সমাজসেবা কার্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।
১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সারা দেশে দুস্থ, বিধবা, অসহায় বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি সুবিধাভোগী ভাতা চালু করা হয়। বগুড়ার ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৪৮৬ জন বয়স্ক, ১৮ হাজার ২৫০ জন বিধবা ও ৬ হাজার ৪৭ জনের নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড রয়েছে। কার্ডধারী প্রত্যেক বিধবার নামে বরাদ্দ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা, বয়স্কদের ৬০০ টাকা ও প্রতিবন্ধীদের ৮৫০ টাকা। সেই হিসাবে ৩ মাস পরপর এক বছরে চার কিস্তিতে তাঁদের টাকা দেওয়া হয়। গত বছর থেকে এসব কার্ডধারীদের মুঠোফোনে নগদ হিসাব নম্বর খুলতে বলা হয়। সেই হিসাব নম্বরে ভাতার টাকা পাঠানো হয়।
ভাতাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ কার্ডধারীরা টাকা তোলার সময় তাঁদের মুঠোফোন হিসাব নম্বরের গোপন পিনকোড এজেন্টদের কাছে বলে দেন। এজেন্টরা গোপন পিনকোড প্রতারক চক্রকে জানিয়ে দেয়। এভাবে প্রতারক চক্র টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এলাঙ্গী ইউনিয়নের তারাকান্দী গ্রামের আনোয়ারা খাতুন বিধবা ভাতা পান। তিনি বলেন, ‘আমার মুঠোফোনে এক ব্যক্তি সমাজসেবা অফিসের লোক বলে পরিচয় দিয়ে ছয় সংখ্যার একটি মেসেজ (খুদে বার্তা) দেন। সেই মেসেজে সংখ্যাটি আমাকে বলতে বলেন। সেই সংখ্যা বলার পর মুঠোফোন থেকে টাকা নাই হয়ে গেছে।’
প্রতারণার শিকার কয়েকজন থানায় জিডি করেছেন। অনেকে সমাজসেবা অফিসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।
এ সম্পর্কে ধুনট থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল কুদ্দুস বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কৌশলে কয়েকজনের কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব না হওয়ায় প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল কাফি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ শুধু ধুনটেই নয়, সারা দেশে একই অবস্থা হয়েছে। তথ্যপ্রমাণের অভাবে প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না।