নাটোরের লালপুরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে ট্রেন অবরোধ করেন আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। রোববার বিকেলে আবদুলপুর রেলস্টেশনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরের লালপুরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির আনন্দমিছিল থেকে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার আবদুলপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে মনোনয়নবঞ্চিত নেতার পাঁচ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন।
এর আগে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা আবদুলপুর রেলস্টেশনে তিনটি ট্রেন অবরোধ করেন। আধঘণ্টা পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে।
আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। বিকেল চারটার দিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
লালপুর থানা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়। এর পরপরই মনোনয়নপ্রত্যাশী লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের সমর্থকেরা আবদুলপুর রেলস্টেশন বাজারে প্রতিবাদ মিছিল করেন। এর কিছুক্ষণ পর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের ১৫-২০ জন সমর্থক সেখানে আনন্দমিছিল বের করেন। মিছিল থেকে হঠাৎ করেই শামীম আহমেদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে পাঁচজন আহত হন। খবর পেয়ে আবদুলপুর ফাঁড়ি থেকে পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পুলিশ লালপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘আনন্দমিছিলে বর্তমান সংসদ সদস্যের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে তাঁর নামে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। এ সময় আমি বাজারে আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসেছিলাম। হামলাকারীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে পাঁচজনকে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যান।’
এর আগে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিকেলে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়। লালপুরের চংধুপইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা আবদুলপুর জংশনে যাত্রীবাহী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন অবরোধ করেন। এ সময় দুই পাশে আরও দুটি ট্রেন রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা ও খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী খুলনা মেইল আটকা পড়ে। আধঘণ্টা পর পুলিশ এসে রেললাইন থেকে তাঁদের সরিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীরা এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও তাঁর ভাতিজা লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের পক্ষে স্লোগান দেন। চংধুপইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক, শামীম আহমেদ সাগরের অনুসারী কৃষক লীগের নেতা উজ্জ্বল হোসেন, লালপুর উপজেলা যুবলীগের সদস্য সুমন প্রামাণিক বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।