নওগাঁয় নিহত বিএনপির নেতা কামাল আহমেদের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁ সদর উপজেলায় কামাল আহমেদ (৫২) নামের বিএনপির এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ রোববার সকালে কামালের ছেলে নবাব আলী বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

 শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে নওগাঁ-সান্তাহার সড়কের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় কামাল আহমেদকে বহনকারী অটোরিকশার গতি রোধে হামলা করে হেলমেট ও মাস্ক পরা দুর্বৃত্তরা। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক কামাল আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন।

কামাল আহমেদ নওগাঁ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি। এ ছাড়া তিনি নওগাঁ ট্রাক বন্দোবস্তকারী সমিতির সাবেক সভাপতি। কামাল আহমেদ সাংস্কৃতিক সংগঠন নওগাঁ নজরুল একাডেমির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) নওগাঁ জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন।

হত্যার ঘটনার ১৭ ঘণ্টা পার হলেও হামলাকারী কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ছয় থেকে সাতজন হামলাকারী তিনটি মোটরসাইকেলে এসে কামাল আহমেদের ওপর হামলা চালায়।

কামাল আহমেদের ওপর হামলার সময় একই অটোরিকশায় ছিলেন তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী ও পৌরসভার চকরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুমন মণ্ডল। তিনি বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে তিনি ও কামাল আহমেদ একসঙ্গে সান্তাহার রেলস্টেশন এলাকায় যান। সান্তাহারে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা শেষে রাত ৯টার দিকে তাঁরা অটোরিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন। পথে সান্তাহার-নওগাঁ সড়কের ইয়াদ আলীর মোড়ে পৌঁছালে তিনটি মোটরসাইকেল রাস্তার ওপর আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁদের অটোরিকশার গতি রোধ করে হেলমেট ও মুখে কাপড় বাঁধা ছয়-সাতজন লোক। অটোরিকশাটির পেছনে অন্য দুজন যাত্রীর সঙ্গে কামাল বসেছিলেন। আর তিনি বসেছিলেন অটোরিকশার সামনে চালকের পাশের আসনে। হামলাকারীরা কামালকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। তখন তিনি, গাড়ির চালক ও অন্য দুই যাত্রী প্রাণভয়ে দৌড়ে রাস্তার পাশের একটি গলিতে ঢুকে পড়েন। কিছুক্ষণ পর এসে দেখেন কামাল রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ওপর পড়ে আছেন। ততক্ষণে আশপাশের লোকজন সেখানে জড়ো হন। মুখে হেলমেট ও কাপড় বাঁধা থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি তাঁরা।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, হামলার সময় ঘটনাস্থলে রাস্তার পাশে থাকা একটি বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারীরা ছয়-সাতজন ছিল। তবে হেলমেট ও মুখে কাপড় বাঁধা থাকায় কাউকে চেনা যাচ্ছে না। তবে প্রত্যক্ষদর্শী, পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে ইতিমধ্যে এই হত্যার কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। শিগগিরই হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা করেন ওসি।

আজ সকালে কামাল আহমেদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে মাতম চলছে। সকাল থেকেই তাঁর জানাজায় অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বজনেরা এসে ভিড় করেন। নিহত বিএনপি নেতার স্বজনদের খোঁজ নিতে আসেন নওগাঁ পৌরসভার মেয়র বিএনপির নেতা নাজমুল হক।