প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন। সৌদি আরবের জেদ্দায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বাসস জেদ্দা, সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও অঞ্চলটিতে অবৈধ দখলদারি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য আমি সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই ভয়াবহ যুদ্ধ, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও অবৈধ দখলদারি বন্ধে ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের জেদ্দায় সোমবার ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমি ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের পক্ষে আমার ভূমিকা অব্যাহত রাখব।’ তিনি বলেন, শান্তির জন্য তাদের মুসলিম নারীদের আওয়াজ শুনতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা জানাচ্ছি। গাজার এ নৃশংসতা, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার দুই লাখ নারীর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ নৃশংস ঘটনাগুলো আমাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা এবং নারী ও শিশুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেন—
প্রথমত, ফিলিস্তিনে অবিলম্বে সংঘাতের অবসান এবং সেখানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর অপরাধের বিচার। দ্বিতীয়ত, সব অপরাধ, সহিংসতা, বৈষম্য ও নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ইসলামভীতিকে ‘না’ বলুন। তৃতীয়ত, এসডিজি-৫ পূরণের লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সমতা অর্জন ও নারীদের ক্ষমতায়নের দিকে যথাযথ মনোযোগ দিন। চতুর্থত, মুসলিম নারীরা যেন স্বাধীনভাবে জনসমক্ষে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করুন। পঞ্চমত, নারীর ক্ষমতায়ন ও মূল স্রোতে নারীদের ভূমিকার উজ্জ্বল উদাহরণ বাংলাদেশ, বন্ধুপ্রতিম মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এ–সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বিনিময়ে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এই বহুল প্রতীক্ষিত ইস্যুগুলোতে সংলাপ প্রত্যাশিত।

পবিত্র ওমরাহ পালন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল পবিত্র ওমরাহ পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রথমে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র কাবা শরিফের চারদিক তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া সায়ি করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র মসজিদ মসজিদুল হারামে নামাজ আদায় করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও এর জনগণের পাশাপাশি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করেন।