জিদান ও মেসি | টুইটার

খেলা ডেস্ক: জিনেদিন জিদান ও লিওনেল মেসি—ফুটবল ইতিহাসের দুই চিরকালীন নক্ষত্র। একসঙ্গে কখনো খেলা হয়নি তাঁদের। তবে প্রতিপক্ষ হয়ে একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা। রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে জিদান একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছেন বার্সেলোনার মেসির। এবার স্পোর্টসওয়্যার ব্র্যান্ড অ্যাডিডাসের উদ্যোগে দুই মহাতারকা মুখোমুখি হয়েছেন এক সাক্ষাৎকারে। যেখানে একে অপরকে নিয়ে তাঁদের ভাবনা, ফুটবল–দর্শনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তাঁরা।

মুখোমুখি এই সাক্ষাৎকারে মেসিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন জিদান। এ সময় মেসিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জিদান বলেছেন, ‘একটা শব্দই শুধু বলব: জাদু। লিও (মেসি) ও আমার প্রতিদিন দেখা হয় না। তাই আজকের দিনটি আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমি জানাতে পারব যে আমি তাকে কত পছন্দ করি। আমি মনে করি, এটা পুরোপুরিই জাদু। এই অর্থে যে বল ধরার আগেই সে জানত কী করতে হবে। বিশেষত আমার মতো কেউ যে কিনা ফুটবল বোঝে (তার জন্য মেসিকে দেখা দারুণ ব্যাপার)। আমি জানতাম, মেসি কী করতে যাচ্ছে। যখন আমি মাঠে তাকে সে যা করে, তা করতে দেখতাম। আমি বলতাম, “এটাই।” মানুষ ফুটবলে এটাই দেখতে চায়। এমন খুব অল্পই আছে, তবে মেসির মতো নয়।’

মেসিও অবশ্য একইভাবে জিদানের প্রতি নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। ফ্রান্সের ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ককে নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘আমি এ জন্য বলছি না যে তুমি এখানে আছ। আমি আগেও অনেকবার বলেছি। আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি। আমরা একসঙ্গে খেলার মতো সৌভাগ্যবান ছিলাম না। তবে আমরা একে অপরের বিপক্ষে কিছু ম্যাচ খেলেছি, তুমি যা করতে তার প্রতি আমার সব সময় সম্মান ও মুগ্ধতা ছিল।’

এরপর প্রতিপক্ষ জিদানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে মেসি আরও বলেছেন, ‘তুমি যখন মাদ্রিদে ছিলে, আমি তোমাকে অনুসরণ করতাম। তুমি আমাকে অনেক ভুগিয়েছ। কারণ, আমি বার্সেলোনার হয়ে খেলতাম। আমার কাছে তুমি ইতিহাসের সেরাদের একজন। তুমি এমন একজন খেলোয়াড়, যে একেবারে ভিন্ন, মার্জিত ও জাদুকর। তোমার মধ্যে সবকিছু ছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে লেভারকুসেনের বিপক্ষে তোমার গোলটি আমার মনে আছে। ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে বিশ্বকাপে করা গোলটিও।’

সেই আলাপে ১০ নম্বর জার্সির গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেছেন মেসি। এই জার্সিকে কীভাবে দেখেন জানাতে গিয়ে ডিয়েগো ম্যারাডোনার প্রসঙ্গ টেনে মেসি বলেছেন, ‘আমাদের জন্য ১০ নম্বর জার্সি খুবই বিশেষ। কারণ, আপনি যখন ১০ নম্বরের কথা বলেন, তখন সবার আগে আসে ম্যারাডোনার নাম। আমরা তার মতো হতে চাই। যদিও আমরা কেউ তার মতো হতে পারি না। এটা আমাদের আকাঙ্ক্ষা। ম্যারাডোনা ছিলেন ১০ নম্বর, যাকে আমরা ভালোবাসি।’

ম্যারাডোনার প্রশংসায় সেটুকুতেই থামেননি মেসি। তিনি আরও যোগ করে বলেছেন, ‘আমি ডিয়েগোর অল্পই দেখেছি। সে যখন শেষ ক্লাব হিসেবে নিউওয়েলসে ফিরেছিল, তখন আমার বয়স ছয়–সাত বছর। তাই আমার মনে নেই। যেমনটা মনে নেই ১৯৯৪ বিশ্বকাপের কথাও। পরে আমি তার ভিডিও দেখেছি। সে ছিল আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। আমাদের আদর্শ। আমাদের জন্য ডিয়েগো এমন কিছু যে আরও অনেক অনেক বছর আমাদের ঘিরে রাখবে। এ নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আমার বাচ্চারা ডিয়েগোকে চেনে কখনো তাকে না দেখেই। তারা তাকে জেনেছে ভিডিও দেখে, আমাদের কাছ থেকে শুনে।’

এই সাক্ষাৎকারে মেসি ক্যারিয়ারের কোনো ম্যাচ আবার খেলতে চান কি না জানতে চান জিদান। উত্তরে মেসি বলেছেন, ‘ক্যারিয়ারে কোনো কিছু নিয়ে আমার আক্ষেপ নেই। কিন্তু ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল এখনো আমার মনে গেঁথে আছে। যদিও গত বিশ্বকাপ দিয়ে আমি সেটা কিছুটা ভুলতে পেরেছি।’