ঘটনাস্থলে বাজি ধরে গুড় আর কাঁচা মরিচ খাচ্ছিলেন কৃষক বায়োজিদ হোসেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁর বদলগাছীতে বাজি ধরে ২ কেজি আখের গুড়, কাঁচা মরিচ ও ২ হালি কলা খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। খাওয়ার পর ঘটনাস্থলে সুস্থতা দাবি করলেও বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই কৃষক। পরে রাতে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটেছে বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউনিয়নের ভান্ডারপুর এলাকায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহীনুর ইসলাম স্বপন।
ওই কৃষকের নাম মো. বায়োজিদ হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার পারআধাইপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা বলছেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কৃষক বায়োজিদের সঙ্গে ইসমাইলপুর গ্রামের বাসিন্দা বিতু কসাইয়ের মধ্যে গুড় খাওয়া নিয়ে বাজি হয়। সে অনুযায়ী বিতু কসাই স্থানীয় এক দোকানির কাছ থেকে ২ কেজি গুড় কিনে এনে কৃষক বায়োজিদকে খেতে দেন। আধা ঘণ্টার ব্যবধানে দুই কেজি গুড় খেয়ে ফেলেন বায়োজিদ। ওই সময় গুড়ের সঙ্গে কাঁচা মরিচও খান তিনি। বাজি ধরার আগে দুই হালি কলাও খেয়েছিলেন তিনি।
গুড় খাওয়া শেষে উপস্থিত অনেকে তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্ক জানতে চাইলে বায়োজিদ তাঁর শরীরের অবস্থা ভালো বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। বাড়ি ফেরার পর অসুস্থতা অনুভব করলে পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রতিবেশী রিপন বাবু বলেন, ‘বায়োজিদ হোসেন যেকোনো খাবার প্রচুর পরিমাণে খাইতে পারতেন। যেখানে-সেখানে গিয়ে বাজি ধরে খাবার খাইতেন। হঠাৎ তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে শোক নেমে আসছে।’
আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আসিফ আদনান বলেন, ‘বায়োজিদ নামের ওই রোগী রাতে পেটব্যথা ও বমির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। অতিরিক্ত গুড় খাওয়ায় তাঁর শরীরে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। রাতের মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’
এ বিষয়ে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহীনুর ইসলাম স্বপন বলেন, ‘বায়োজিদ রাতে স্থানীয় বাজারে বাজি ধরে গুড়, কলা, ডিমসহ আরও কী কী যেন খেয়ে বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বিষয়টি সকালে শুনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বায়োজিদ বিভিন্ন সময় বাজি ধরে খাবার খেতেন। এর আগে একজনের সঙ্গে বাজি ধরে ৫ কেজি জিলাপি খেয়ে এক জোড়া হালের গরুও জিতেছিলেন। এলাকায় সে পেটুক হিসেবে পরিচিত। মারা যাওয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। সন্ধ্যার আগে জানাজা শেষে বাড়ির পাশে কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। থানায় কোনো অভিযোগও আসেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’