মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি জয়পুরহাট: ‘হ্যালো, আমি ইউএনও বলছি, আমরা কম দামে আলু ও চাল বিক্রি করব। যদি আলু ও চাল নিতে চান, তাহলে এখনই এক লাখ টাকা বিকাশ ও নগদে পাঠান।’ এভাবেই জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি মুঠোফোন নম্বর থেকে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যবসায়ীদের ফোন দেওয়া হয়। এতে সন্দেহ হয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর। তাঁরা সরাসরি ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন, ইউএনও নন, প্রতারক চক্র কাজটি করেছে।

এ ঘটনার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে ইউএনও মনজুরুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে নিজের সরকারি মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করা হয়েছে উল্লেখ করে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় স্ত্রী–কাণ্ডে সম্প্রতি আক্কেলপুরের ইউএনও আরিফুল ইসলামকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। নতুন ইউএনও হিসেবে মনজুরুল আলম গত রোববার দায়িত্ব নেন। গতকাল তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণমাধ্যমকর্মী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। আজ সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি মুঠোফোন নম্বর থেকে কলেজ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী শফিউদ্দিন, পুরাতন বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম আকন্দ ও চাল ব্যবসায়ী আতিকুজ্জামানের কাছে কল করা হয়। কম দামে আলু ও চাল বিক্রির কথা বলে তাঁদের কাছে নগদ ও বিকাশে টাকা দাবি করা হয়। পরে ব্যবসায়ীরা ইউএনওর সঙ্গে দেখা করলে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন।

আক্কেলপুর পুরাতন বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, আক্কেলপুর ইউএনওর সরকারি মুঠোফোন নম্বর তাঁর মুঠোফোনে সংরক্ষণ করা আছে। সন্ধ্যায় হঠাৎ তাঁর নম্বর থেকে কল আসে। কলটি ধরার পর ইউএনও পরিচয়ে একজন বলেন, ‘জহুরুল সাহেব, আমরা কম দামে আলু বিক্রি করব। যদি কেউ আলু নিতে চায়, তাহলে দ্রুত আমার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।’ এরপর তিনি ব্যক্তিগত নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি ১০ থেকে ১২ বার কল করেন। একপর্যায়ে তাঁর পীড়াপীড়িতে এক আলু ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এরপর ইউএনও পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আছেন জানিয়ে বিকাশ ও নগদে এক লাখ টাকা দ্রুত পাঠাতে বলেন। তখন আলু ব্যবসায়ী উপজেলা পরিষদে গিয়ে ইউএনওকে পেয়ে তাঁকে ঘটনা খুলে বলেন। তখন ইউএনও জানান, বিষয়টি ভুয়া।

চাল ব্যবসায়ী আতিকুজ্জামান বলেন, ‘আজ সন্ধ্যার সময় ইউএনওর সরকারি মুঠোফোন নম্বর থেকে কল করে ৩৫ টাকা কেজি দরে আমার কাছে চাল বিক্রির কথা বলে টাকা চাওয়া হয়। এই টাকা ডিসি স্যারকে দিতে হবে বলে দ্রুত পাঠাতে বলেন। এতে সন্দেহ হলে ইউএনও সঙ্গে দেখা করে প্রতারণার কথা জানতে পারি।’

ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, ‘এখানে সবেমাত্র যোগদান করেছি। আজ গোপীনাথপুর হিমাগারে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি শুরু করব। কথাটি জানতে পেরে প্রতারক চক্র আমার সরকারি মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে আলু বিক্রির কথা বলে টাকা দাবি করেছে। বিষয়টি জানার পর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছি।’