সারদা পুলিশ একাডেমিতে বক্তব্য রাখেন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

আব্দুল কাদের নাহিদ, রাজশাহী থেকে: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯-এর কোয়ারেন্টাইনকালে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পুলিশ সাধারণ মানুষের মাঝে খাবার সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া শেষকৃত্য অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে পুলিশ জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩৯তম ক্যাডেট উপপরিদর্শক (এসআই)-২০২১ ব্যাচের এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এ কথা বলেন। 

এসআই ২০২১ ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

অনুষ্ঠানে আইজিপি লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে দেশপ্রেমের মহান ব্রতে দায়িত্ব পালনের জন্য নবীন এসআইদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সব সময় নিরপরাধ, বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। নবীন পুলিশ অফিসার হিসেবে মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারি ও শৃঙ্খলার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

পুলিশপ্রধান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর যেকোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে। বাংলাদেশ আজ সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে একটি স্থিতিশীল, জঙ্গিমুক্ত, মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে সুপরিচিত। বর্তমান সরকার পুলিশের জনবল বৃদ্ধি, আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের মান উন্নয়ন করে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি বিশ্বমানের আইনি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

আইজিপি একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা পুলিশের প্রধান দায়িত্ব। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কর্মপরিধি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবর্তিত হচ্ছে অপরাধ সংঘটনের কৌশল। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনীকে যুগোপযোগী ও আধুনিক করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ জনগণের আস্থার জায়গা দখল করে নিয়েছে। সদ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসআইগণ দেশ গঠন ও জনসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে জনবান্ধব ও সেবাধর্মী পুলিশিংয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে আইজিপি একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্যারেডে ৫১ জন নারীসহ ৭৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্যারেড পরিদর্শন শেষে আইজিপি বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের পদক প্রদান করেন। বেস্ট ক্যাডেট হিসেবে পদক পেয়েছেন মঞ্জয় কুমার কুণ্ডু; বেস্ট একাডেমিক হিসেবে আনিকা তাবাসসুম; বেস্ট ইন ফিল্ড এক্সিকিউটিভ হিসেবে রাবেয়া বসরী আঁখি; বেস্ট শুটার হিসেবে তূর্ণ মোহাম্মাদ মুহতাসিম এবং বেস্ট সুইমার হিসেবে মো. তৌফিকুজ্জামান পদক পেয়েছেন।

আইজিপি বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের পদক প্রদান করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) মীর রেজাউল আলম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।