উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম যোগাযোগপথ বঙ্গবন্ধু টানেল। পতেঙ্গা প্রান্তে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি চট্টগ্রাম: মহা ধুমধামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল হিসেবে বঙ্গবন্ধু টানেল আজ শনিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একপাশে
ব্যস্ত বন্দর, অন্যপাশে ভারী শিল্প-কারখানা। কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের দুই
দৃশ্যের মিলন ঘটছে অবশেষে, ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে চট্টগ্রামবাসী।
চট্টগ্রাম
বন্দর নগরীকে চীনের সাংহাই এর আদলে গড়ে তোলার যে উচ্চভিলাসী লক্ষ্য
সরকারের ছিল, তার একটি বড় পদক্ষেপের বাস্তবায়ন শনিবার করতে চলেছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহা ধুমধামে উৎসব-আয়োজনে এদিন কর্ণফুলী
নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন
সকাল ৬টা থেকে টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
এ টানেলের
মাধ্যমে শিল্পঘেরা কর্ণফুলীর দুই পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হচ্ছে, সংযোগ
হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের। তাতে গতি পাবে দেশের রপ্তানি
বাণিজ্য।
কর্ণফুলী নদীর একপাড়ে বন্দর নগরী, অন্যপাড়ে আনোয়ারা
উপজেলার শিল্প এলাকা। ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ার উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য নিয়ে
বানানো এই টানেলের মাধ্যমে এই দুই পাড় যুক্ত হচ্ছে। পথ খুলছে বিশ্বমানের
যোগাযোগের।
টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “উদ্বোধনের জন্য আমরা শতভাগ প্রস্তুত।”
উদ্বোধন
অনুষ্ঠান হবে টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে। শনিবার সকালে উদ্বোধন ঘোষণা করে
প্রধানমন্ত্রী টানেল দিয়ে যাবেন আনোয়ারা প্রান্তে। পরে কোরিয়ান ইপিজেটের
মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে এক বাণীতে বলেছেন, এই টানেলের ফলে চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে ব্লু -ইকোনমির নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।
“আমি আশা করি, আধুনিক ও সময়সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দেশের ভেতরে ও বাইরে শিল্পায়ন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ প্রবাহ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর নিচে প্রথম সড়ক টানেল। দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও অকুণ্ঠ সমর্থনের ফলেই আজকে উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে।
“আগামী দিনেও গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।”
টানেল উদ্বোধন নিয়ে উচ্ছ্বাস কাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যেও। আনোয়ারার বাসিন্দা সাইফুল হক বলছেন, পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে নগরীর যোগাযোগ আমূল পাল্টে দেবে এই টানেল, সেই সঙ্গে সহজ হবে তাদের জীবন।
“আগে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগত দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। পুরো শহরের জ্যাম ঠেলে যেতে কখনো কখানো আরো বেশি সময় লাগত। এখন সময় লাগবে ১৫ মিনিট। আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দিলে তখন আগ্রাবাদ যেতেও বেশি সময় লাগবে না।”
যেভাবে উদ্বোধন
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা সকাল ১০টার পর পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে একটি ফলক
উন্মোচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করবেন।
গাড়িতে চড়ে টানেল পার হওয়ার পর আনোয়ারা প্রান্তে তিনি টোল দেবেন। পরে নদীর দক্ষিণ তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করবেন।
নদী
তলদেশের সড়ক টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ স্মারক
ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং একটি বিশেষ সিলমোহরও অবমুক্ত করবেন।
উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে এক জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে বন্দর নগরীতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চট্টগ্রাম সিটি করপোশেনের উদ্যোগে পুরো নগরীকে সাজানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে নগরী ও আনোয়ারা প্রান্তের রাস্তাঘাট।
পতেঙ্গা প্রান্তে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ম্যুরাল। সঙ্গে আছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান। জনসভার স্থলে নৌকার আদলে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ।
এ জনসভায় ১০ লাখ মানুষের জমায়েত ঘটবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা আশা করছেন।
কেন এই টানেল
এই
টানেল কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে চট্টগ্রাম শহর এবং আনোয়ারার মধ্যে সরাসরি
যোগাযোগ তৈরি করেছে। এতে চট্টগ্রাম শহর এড়িয়ে ঢাকা বা দেশের যে কোনো এলাকা
থেকে কক্সবাজার বা দক্ষিণ চট্টগ্রামমূখী যানবাহন চলাচলের সময় ও দুরত্ব কমে
আসবে।
চট্টগ্রাম শহরের নেভাল একাডেমি পয়েন্ট দিয়ে যানবাহন প্রবেশ
করে কর্ণফুলীর ওপারে আনোয়ারা উপজেলার কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি
(কাফকো) এবং চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) মাঝামাঝি
দিয়ে বের হবে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে আগে দুই উপায়ে নগরীতে যাওয়া
যেত। সিইউএফএল সংলগ্ন ১৫ নম্বর জেটি ঘাট দিয়ে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে, অথবা
কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু পার হয়ে।
ইঞ্জিন নৌকায় নদী পার হয়ে
আনোয়ারার মানুষ ১৫ নম্বর জেটি ঘাট এলাকায় নামত। কাছেই চট্টগ্রামের শাহ
আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। তবে নৌপথে পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ এবং গাড়ি
থেকে মালামাল নিয়ে নৌযানে ওঠানামাও কষ্ট কর।
আর আনোয়ারা সদর থেকে
শাহ আমানত সেতু পেরিয়ে নগরীতে প্রবেশের পর পুরো নগরী অতিক্রম করে যেতে হত
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগত। কেবল
আনোয়ারা নয়, বাঁশখালী ও লোহাগাড়ার বাসিন্দাদেরও এভাবে বিমানবন্দর যেতে হত।
টানেল
খোলার পর আনোয়ারা সদর থেকে টানেল পেরিয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দরে যেতে সময় লাগবে সব মিলিয়ে ১৫ মিনিট। এরমধ্যে টানেল পার হতে সময়
লাগবে সাড়ে তিন মিনিট।
টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তের অদূরে
চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি খুলে দেওয়া হলে সেখান থেকে
নগরীর আগ্রাবাদ বা জিইসি মোড় যেতে লাগবে আর ১০-১৫ মিনিট সময়।
এক্সপ্রেসওয়েটির কাজ শেষ পর্যায়ে।
কেইপিজেড থেকে টানেল হয়ে
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রস্তাবিত বে টার্মিনালে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১০-১৫
মিনিট। আর কেইপিজেড থেকে টানেল হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে যেতে লাগবে ১৫-২০
মিনিট।
নগরীর জামালখান থেকে টানেল সংযোগ সড়ক এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে গিয়ে প্রতিদিন অফিস করেন ব্যাংক কর্মকর্তা আজাদ মঈনুদ্দিন।
তিনি বলেন, “জামালখান থেকে শাহ আমানত সেতু ব্যবহার করে চলাচল করাই আমাদের জন্য সহজ। তবে শহরের অপর প্রান্ত যেমন ইপিজেড বা
বন্দর এলাকায় যারা আসা-যাওয়া করেন তাদের জন্য টানেল সহজ ও কম সময়ের হবে।”
আনোয়ারারর
বারাশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, টানেলের কারণে শুধু
যাতায়াতের সময় কমেছে, তা নয়। টানেলের কারণে কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত ছয়
লেইনের সড়ক হয়েছে।
“আমাদের এলাকায় জমির দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। টানেল
খোলার পর পারকি বিচে পর্যটক বহু গুণ বাড়বে। ব্যবসা ও জীবনযাত্রার মান বাড়বে
টানেলের কারণে। তবে যানজট নিরসন, ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান ও শিল্প বর্জ্য
ব্যবস্থাপনার মাস্টারপ্ল্যান করে আনোয়ারায় নগরায়ন করতে
হবে।”
কর্ণফুলী নদীর ওপর রয়েছে তিনটি সেতু। নদীর তলদেশে পলি জমা বড় সমস্যা। বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়াতে ন্যূনতম ১৪ মিটার গভীরতা দরকার হয়। কিন্তু পলি জমার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমের জন্য তা হয়ে উঠছে সমস্যার।
কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে বাড়ছে শিল্পায়ন। পর্যটন শহর কক্সবাজারগামী পরিবহনের চাপও বাড়ছে। ফলে নাব্য হারানোর ঝুঁকিতে নদীর উপর আর কোনো সেতু নির্মাণ না করে যানবাহনে চলাচলে গতি আনতে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
টানেল আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ভারী শিল্প এলাকা। সিইউএফএল এবং কাফকো ছাড়াও দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি শিল্প কারখানা কোরিয়া ইপিজেড। এই শিল্পাঞ্চল থেকে বছরে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়।
আনোয়ারায় প্রস্তাবিত ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে জি টু জি পদ্ধতিতে গহিরা এলাকায় ৭৭৪ একর জমিতে চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে ৩৭১টি শিল্প কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব রয়েছে। আবার আনোয়ারার দক্ষিণ পাশে রয়েছে মহেশখালী উপজেলা। দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে সেখানে। মহেশখালী দ্বীপকে গড়ে তোলা হচ্ছে অর্থনৈতিক হাব হিসেবে।
টানেলের মাধ্যমে এসবের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের পথ খুলবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের রপ্তানিপণ্য খুব সহজেই অনেক কম সময়ে বন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হবে। সুবিধা পাবে রপ্তানিকারকরা।
২০০৮ সালে চট্টগ্রামবাসীকে এই টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুর দিকে সেই প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক বুলি মনে হলেও তা এখন বাস্তব হয়েছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক কাজের উদ্বোধন করেন।
প্রকল্পের মোট ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, যেসব কাজ বাকি আছে, তা টানেলের বাইরের অংশে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সেসব কাজ শেষ হবে।
বছরে চলবে ৬৩ লাখ বাহন
২০১৩ সালে ফোরসি এবং
হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অভি অরূপ অ্যান্ড পার্টনারস হংকং লিমিটেড যৌথভাবে
ফিজিবিলিটি স্টাডি করে। সমীক্ষা অনুযায়ী টানেল চালুর প্রথম বছর ৬৩ লাখ গাড়ি
টানেল দিয়ে চলাচল করবে। সে হিসাবে দৈনিক প্রায় ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি চলবে।
২০২৫ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজার ৩০৫টি
যানবাহন যাতায়াত করতে পারবে। পর্যায়ক্রমে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচলের
সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখে উন্নীত হবে।
টানেল চালুর প্রথম বছরে
চলাচলকারী বাহনের প্রায় ৫১ শতাংশ হবে কনটেইনার পরিবহনকারী ট্রেইলর ও
বিভিন্ন ধরনের ট্রাক ও ভ্যান। বাকি ৪৯ শতাংশের মধ্যে ১৩ লাখ বাস ও মিনিবাস,
১২ লাখ কার, জিপ ও বিভিন্ন ছোট গাড়ি চলবে।
যেভাবে হল বঙ্গবন্ধু টানেল
২০১৫
সালের ১২ নভেম্বর একনেক সভায় চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে চীনের
সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তুলতে টানেল নির্মাণ প্রকল্প
অনুমোদন দেয় সরকার। ওই বছরের ২৪ নভেম্বর চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন
কোম্পানির (ফোরসি) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে সেতু বিভাগ।
তখন ৮
হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার
লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এই ব্যয়ের মধ্যে চীনা ঋণ হিসেবে এক্সিম ব্যাংকের
যোগান দেওয়ার কথা ছিল ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কিন্তু চীনা
কর্তৃপক্ষের ঋণ দিতে দেরি হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের
ডিসেম্বরে।
এরপর ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বরের একনেক সভায় প্রায় ১ হাজার
৯২৮ কোটি টাকা ব্যয় এবং বাস্তবায়ন সময় এক বছর ৬ মাস বাড়িয়ে প্রথমবার
প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। তাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।
তখন প্রকল্পটি ২১ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার লক্ষ্য ধরা হলেও মহামারীর কারণে
সরকার বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে এক বছর সময় বৃদ্ধির সুযোগ দেয়। সে হিসাবে
প্রকল্পটি গত ডিসেম্বর মাসে শেষ করার কথা ছিল।
কিন্তু ওই মেয়াদেও
কাজ শেষ করতে না পারায় গত জানুয়ারি মাসে ৩১৫ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে
দ্বিতীয়বার সংশোধন করা হয়। ফলে প্রকল্পের ব্যয় গিয়ে ঠেকে প্রায় ১০ হাজার
৬৯০ কোটি টাকায়। ব্যয় বৃদ্ধির ফলে শেষ পর্যন্ত চীনা ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫
হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। আর মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়
ধরা হয়।