যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান ডেভিড পেত্রাউস | ছবি: রয়টার্স

পলিটিকো, বার্লিন: ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় স্থল অভিযান চালালে বড় ধরনের প্রতিরোধের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান ডেভিড পেত্রাউস। ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর শীর্ষ জেনারেল হিসেবে কাজ করা পেত্রাউস বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ঢুকলে এই লড়াই অনেক বছর ধরে চলতে পারে এবং সেখানে ভয়ানক লড়াই হবে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে ডেভিড পেত্রাউস এসব কথা বলেছেন। তাঁর মতে, ইসরায়েলি বাহিনী বোমা হামলা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি স্থল অভিযানে গেলে পরিস্থিতি দ্রুতই ‘মোগাদিসু অচলাবস্থায়’ রূপ নিতে পারে।

মোগাদিসু অচলাবস্থা বলতে ১৯৯৩ সালের একটি ঘটনার প্রসঙ্গে টেনেছেন পেত্রাউস। তখন সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে তিনটি আমেরিকান ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের মার্কিন সেনারা উদ্ধার করতে গেলে নগরীতে দুই পক্ষে তুমুল লড়াই শুরু হয়। পেত্রাউস বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী শত্রুপক্ষের সীমান্তে ঢুকলে একই বাস্তবতার মুখোমুখি হবে।

হামাস যোদ্ধারা যেভাবে ইসরায়েলে ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, তেমন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় যদি তাঁরা প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে দেখাতে পারেন, তাহলে সেখানে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী, নানা ধরনের বিস্ফোরক ডিভাইস, অতর্কিত হামলা, প্রাণঘাতী ফাঁদ দেখা যাবে বলে মনে করেন সাবেক এই মার্কিন জেনারেল।

হামাস যোদ্ধারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে রকেট হামলার পাশাপাশি দেশটির ভূখণ্ডে ঢুকে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড চালান। হামাসের এই হামলায় ১ হাজার ৪০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল থেকে প্রায় ২০০ মানুষকে ধরে এনে গাজায় জিম্মি করেছে হামাস। হামলার পর ওই দিনই গাজায় বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। পাশাপাশি গাজাকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে সেখানে স্থল অভিযান চালাতে কয়েক লাখ সেনা, শত শত ট্যাংকসহ ভারী সামরিক সরঞ্জাম সীমান্তে জড়ো করেছে ইসরায়েল।

পেত্রাউস বলছেন, মার্কিন বাহিনীর হয়ে তাঁর যুদ্ধক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য সতর্কবার্তাই দেয়। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস দমনের লড়াইয়ে আপনি এক বা দুই বছরে জয়ী হবেন না। এতে সাধারণত এক দশক বা তার চেয়ে বেশি সময় লাগে, যেমনটি আমরা ইরাকে দেখেছি, যেমনটি আমরা আফগানিস্তানে দেখেছি।’

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই সেনাবাহিনী প্রধান মনে করেন, ইসরায়েল যদি হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হতে চায়, তাহলে ইসরায়েলকে ভিন্ন পরিকল্পনা করতে হবে। সেখানে মৌলিক সেবাসমূহ পুনরায় চালু করা, গাজা পুনর্গঠন এবং ওই অঞ্চলে আরও ভালো শাসনব্যবস্থা যেন হয়, সে জন্য ইসরায়েলকে পরিকল্পনা নিতে হবে।