নরসিংদী রেলস্টেশনে ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ও আন্তনগর এগারসিন্দুর ট্রেনে তল্লাশি চালিয়ে ৭৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নরসিংদী: নরসিংদী রেলস্টেশনে ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ও আন্তনগর এগারসিন্দুর ট্রেনে তল্লাশি চালিয়ে ৭৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। পরে প্রিজন ভ্যানে করে দুই দফায় তাঁদের থানায় নেওয়া হয়।

এদিকে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে শতাধিক কর্মী ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনে ওঠার সময় পুলিশ বাধা দেয়। ওই সময় তাঁরা রেললাইনে পাথর ছুড়ে মারলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে বিএনপির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ বলছে, তাদের ছত্রভঙ্গ করতে শটগানের ৩৫টি গুলি ছোড়া হয়েছে।

নরসিংদী রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অন্তত ৫০ জন পুলিশ সদস্য সেখানে অবস্থান করছেন। তাঁদের সঙ্গে আছেন নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। ট্রেন থামিয়ে তারা ভেতরে ঢুকে যাত্রীদের তল্লাশি করছেন। সন্দেহভাজনদের এনে স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে রাখা হচ্ছে। পরে প্রিজন ভ্যানে করে দুই দফায় তাঁদের থানায় নেওয়া হয়। ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই যুবক।

তল্লাশি কার্যক্রমে অংশ নেওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘বিনা টিকিটের যাত্রীদের আমরা ট্রেন থেকে নামিয়ে দিচ্ছি। ঢাকায় বিএনপি ও জামায়াতের মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে নাশকতা করতে পারেন—এমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শুধু আটক করা হচ্ছে। ট্রেনের ভেতর ও বাইরে থেকে ৭৫ জনকে আটক করেছি। তাঁদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা করা হবে।’

রেলস্টেশনে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন রায়পুরা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। তাঁকে স্টেশনটির ভিআইপি কক্ষে রাখা হয়েছিল। তিনি কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে তাঁকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। আটক কয়েকজন বলেন, তাঁরা কোনো সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা যাচ্ছিলেন না। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রয়োজনে তাঁরা ঢাকায় রওনা হয়েছিলেন।

স্টেশনে অবস্থানরত কয়েকজন যাত্রী বলেন, যাঁরা সমাবেশে যোগ দেবেন, তাঁরা তো দু-এক দিন আগেই ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। পুলিশ অযথাই তল্লাশির নামে তাঁদের হয়রানি করছেন।

এ বিষয়ে নরসিংদী মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিএনপির শতাধিক কর্মী ট্রেনে উঠতে না পেরে আমাদের দিকের রেললাইনে পাথর ছুড়ে মারেন। এতে আমাদের তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে আমরা শটগানের ৩৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি। ঢাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্যই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নাশকতার সন্দেহে যাঁদের আটক করা হয়েছে, যাচাই-বাছাই শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’