বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল মহল্লার আশা দেবীর হত্যা সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নয়ন ইসলাম নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার শিবগঞ্জ থানায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় নারী আনসার সদস্য আশা দেবী মোহন্ত (৩২) হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে পরকীয়া ছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শিবগঞ্জ থানা-পুলিশ বুধবার রাতে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বানাইল মৌজা থেকে নয়ন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে অভিযুক্ত নয়ন বগুড়ার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। নয়ন উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
আশা দেবী শিবগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বানাইল মহল্লার মুদিদোকানি ভজন কুমার মোহন্তের স্ত্রী। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আনসার দলনেত্রী ছিলেন। শারদীয় দুর্গোৎসবে বানাইল উত্তরপাড়া সর্বজনীন পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
পুলিশ সুপার দাবি করেন, পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই আশা দেবী খুন হয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশা দেবীর ‘প্রেমিক’ নয়ন হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছেন।
পুলিশ সুপারের ভাষ্যমতে, আশা দেবী এবং নয়ন প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে দুজনের মধ্যে কথাবার্তা হতো। একপর্যায়ে আশা দেবীর সঙ্গে নয়নের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিন মাস আগে নয়ন অন্য নারীকে বিয়ে করলে আশা দেবীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, মনোমালিন্য ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নয়ন পথের কাঁটা সরাতে আশা দেবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবে বানাইল উত্তরপাড়া সর্বজনীন পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আশা দেবী। গত সোমবার রাত ১০টার দিকে মন্দির থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে আশা দেবীর সঙ্গে অভিযুক্ত নয়ন ইসলামের দেখা হয়।
আশা দেবী তাঁর বাড়ির দিকে রওনা দিলে অভিযুক্ত নয়নও আশা দেবীর পেছনে পেছনে তাঁর বাড়ির দিকে যান। একপর্যায়ে আশা দেবী বাড়িতে প্রবেশ করে মেইন গেট বন্ধ করে দেন। ওই সময় আশা দেবীর বাড়িতে কেউ ছিল না। অভিযুক্ত নয়ন সময় আশা দেবীর বাড়ির পেছনের ইটের প্রাচীর টপকিয়ে আশা দেবীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। নয়নকে দেখামাত্র আশা দেবী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডা হলে আশা দেবীর দুই হাত পেছন থেকে বেঁধে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে আশা দেবীকে হত্যা করে সোফার পাশে ফেলে নয়ন বাড়ির প্রাচীর টপকে পালিয়ে যান। পরে গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রযুক্তির সহায়তায় খুনি শনাক্তের পর নয়নকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে নয়ন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
এর আগে মঙ্গলবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত আশা দেবী মোহন্তের মা সন্ধ্যা রানী মোহন্ত।