মনোতোষ হত্যা মামলার দুই আসামি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মনোতোষ (৩২) নামের এক যুবককে হত্যার পর স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় করা মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তা ছাড়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন সুজন কুমার সরকার, রুবেল, শিপন, ইউসুফ আলী, লিটন মণ্ডল ও রায়হান সরদার।
দণ্ডপ্রাপ্ত রায়হান সরদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির মধ্যে সুজন কুমার সরকার পলাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি রায়হান সরদার ও শিপন হত্যার শিকার মনোতোষের বাবার ‘স’ মিলে কাজ করতেন। তখন মনোতোষের বাবার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ঋণ নেন রায়হান। কিছুদিন পর সেই ‘স’ মিল বন্ধ হয়ে গেলে রায়হান অন্যত্র কাজ নেন। পরে মনোতোষের বাবা পাওনা টাকার জন্য চাপ দিলে রায়হান ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
সে অনুযায়ী ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শিপনের বাড়িতে পিকনিকের আয়োজন করে মনোতোষকে দাওয়াত করেন রায়হান। মনোতোষ রাত ৮টার দিকে সুজনের বাড়িতে পিকনিক খেতে যান।
মামলার অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পিকনিক শেষে আসামিরা মনোতোষকে বেলকুচি উপজেলার বিশ্বাসবাড়ী হুরা সাগর নদীর উত্তর পাশের ইউক্যালিপটাস বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা মদ ও গাঁজা খায় এবং মনোতোষকে মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়।
মদ পানের একপর্যায়ে মনোতোষ নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁরা মনোতোষকে শ্বাসরোধে হত্যা করে কচুরিপানা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখেন। পরে তারা মনোতোষের স্বজনদের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরদিন পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই অচিন্ত্য কুমার সরকার বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় মামলা করেন।