তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী সম্পাদক হাছান মাহমুদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ঢাকা, ৩ অক্টোবর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাসস ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মহানুভবতা দেখিয়ে চলেছেন, তা নজিরবিহীন। তিনি বলেন, যে খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দিনে নিজের মিথ্যা জন্মদিন পালন করে কেক কেটেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মদদ দিয়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছেন, ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দায়ের করেছেন, সেই চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ খালেদা জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানুভবতা দেখিয়ে চলেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ‘আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে বাধা দিচ্ছে’—এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কোনোভাবেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে না। আর তারা যদি তা মনে করে, তাহলে তো আদালতে যেতে পারে। আর খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার কী পরিমাণ দম্ভ, অহমিকা, যে তাঁর পুত্রবিয়োগে সমবেদনা জানাতে তাঁর বাড়ির দুয়ারে দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে ২০ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি দরজা খোলেননি। তাঁর আমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১২টা মামলা দায়ের করা হয়েছিল, আমাদের সরকার তো খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেনি। তাঁর বিরুদ্ধে সব কটি মামলা সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের। সেসব মামলার বিচার হচ্ছে, তাতেই তিনি সাজা খাটছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শুধু তা–ই নয়, খালেদা জিয়ার নির্দেশে এফবিআইয়ের এজেন্ট লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করার পরিকল্পনা হয়েছিল। পরে চক্রান্ত ফাঁস হয়ে যায়, সেই এজেন্টের এখন বিচার হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার যারা হত্যা করেছে, জিয়াউর রহমানের পথ ধরে খালেদা জিয়াও তাদের আবার পুনর্বাসিত করেছেন।’
খালেদা জিয়া এত প্রতিহিংসা দেখিয়েছেন, এত জিঘাংসা দেখিয়েছেন কিন্তু তাঁর প্রতি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে নজিরবিহীন মহানুভবতা দেখিয়ে যাচ্ছেন, সেটি কি তারা কখনো করত? প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবাহিত ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ ও ছাত্রছাত্রীদের বাসে পৃথকভাবে বসার নির্দেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কাগজে খবরটা দেখেছি, এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে জেনে খুব আশ্চর্য হয়েছি। ছাত্রীরা বিয়ে করলে হলে থাকতে পারবে না, এমন সিদ্ধান্ত আমার দৃষ্টিতে একেবারেই অযৌক্তিক। এ যুগে বিশ্ববিদ্যালয় বাসে ছাত্রীরা এক জায়গায় বসবে, ছাত্ররা আরেক জায়গা বসবে—সেটিও তো অবাস্তব একটি সিদ্ধান্ত। এ ধরনের সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ কীভাবে নেয়, এটা আমার বোধগম্য নয়। আমি এটা শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনব। কারণ, এর উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ শিক্ষামন্ত্রী।’