মাটির কাজ শেষে রংয়ের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে রেখে পাবনার ঈশ্বরদীতে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। মাটির কাজ শেষে এখন শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠছে দেবীর রূপ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অসুরের বিনাশ করতে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার ও গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে সারা দেশের মতো ঈশ্বরদীতে শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। আর এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
এদিকে উপজেলার হিন্দুধর্মাবলম্বীরা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্তুতি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০ অক্টোবর শুরু হবে পূজা। দশমীপূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ২৪ অক্টোবর উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
উপজেলার বিভিন্ন দুর্গামন্দির ঘুরে দেখা যায়, শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষের দিকে।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির তথ্যমতে, এবার উপজেলার ৩২টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মৌবাড়ীয়া শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির ও বারোয়ারী ঠাকুর বাড়ী শ্রী শ্রী সত্য নারায়ণ মন্দিরে এবার প্রতিমা তৈরি করছেন সিরাজগঞ্জ সয়দাবাদ ইউনিয়নের হাট সারুটিয়া গ্রামের উজ্জ্বল পাল। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে নিচ্ছেন ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। উজ্জল পাল জানান, শেষ সময়ের কাজ চলছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গনেশ চন্দ্র সরকার বলেন, 'আমরা পূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। তিনি জানান, এবার উপজেলার মোট ৩২টি মণ্ডপে পূজা উদ্যাপিত হবে। এর মধ্যে কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপকে বিশেষ নজরদারিতে রাখার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী মৌবাড়িয়া ও ঠাকুর বাড়ি বারোয়ারী মন্দিরের কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক উদয় নাথ লাহিড়ীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার তাঁদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে। তাই এবারের পূজায় তাঁদের আনন্দও বেশি হবে।
পূজা সামনে রেখে সম্ভাবনার কথা জানালেন ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী। তিনি বলেন, হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শকদের (এএসআই) বিভিন্ন মণ্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সব কটি পূজামণ্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অন্য বছরের চেয়ে এবার জোরালো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না এবারের পূজায় । তবে এ জন্য তিনি সব স্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।