জিনাতুন নেসা তালুকদার | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি রাজশাহী: সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা জিনাতুন নেসা তালুকদার (৭৬) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বড় ছেলে মাহমুদ হাসান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মাহমুদ হাসান বলেন, তাঁর মা হৃদ্‌রোগসহ বার্ধক্যের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। ৬ অক্টোবর তাঁকে ঢাকার ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ছিলেন। পরে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ২২ অক্টোবর হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ঢাকা থেকে আজ তাঁকে (লাশ) নিয়ে যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আগামীকাল (সোমবার) বাদ জোহর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহী নগরের টিকাপাড়ায়। পরে নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় কবরস্থানে তাঁর বাবার পাশে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

জিনাতুন নেসা তালুকদার ৯ জুলাই ১৯৪৭ সালে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালে রাজশাহীর সরকারি পিএন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও ১৯৭৪ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তাঁর স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহিল বাকী তালুকদার রাজশাহী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। জিনাতুন নেসা রাজশাহী কলেজে পড়া অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৭ সালে তিনি নওহাটা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের ৫ জুলাই সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। ১৯৯৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের উপমন্ত্রী হিসেবে। পরে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রথম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

জিনাতুন নেসা তালুকদারের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সাহসী নেতৃত্ব, সততা ও আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জিনাতুন নেসা তালুকদার। তাঁর কর্মের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’