রাজশাহীর পবায় ব্র্যাকের অগ্নি প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং শেয়ারিং সভা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহীর ৯ উপজেলার ৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কাজ করছে। কমিটিগুলো গঠনের এক বছরের মাথায় এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা মুখ খুলছে, প্রতিকারও হচ্ছে।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক তাদের অ্যাওয়ারনেস, অ্যাকশন অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ফর জেন্ডার ইক্যুয়াল অ্যান্ড সেইফ স্পেসেস ফর উইমেন অ্যান্ড গার্লস-অগ্নি প্রকল্পের আওতায় কমিটিগুলো গঠন করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে রাজশাহী ও গাজীপুর জেলায় গত বছর থেকে প্রকল্পের কাজ চলছে।

আজ সোমবার সকালে রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এ প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং শেয়ারিং সভার আয়োজন করে ব্র্যাক সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স। সেখানে যৌন প্রতিরোধ কমিটির সুফলের কথা তুলে ধরেন বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা। পবার ছয়টি প্রতিষ্ঠানে এ কমিটি রয়েছে।

বায়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক এসএম মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এ কমিটি করার পর আমাদের ২০০ ছাত্রীর মাঝে সাহসী মনোভাব জেগে উঠেছে। আগে তারা রাস্তাঘাটের যৌন হয়রানি গোপন করত। এখন সাহস ও সততার সঙ্গে বীরদর্পে এসে আমাদের কাছে অভিযোগ করা শিখেছে। যারা যৌন হয়রানি করছে, আমরা তাদের সতর্ক করছি। আইনের ভয় দেখাচ্ছি।’

দাদপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুল মজিদ বলেন, ‘আগে মাদ্রাসায় আসার পথে ছাত্রীরা বেশি যৌন হয়রানির শিকার হতো। এই কমিটির কার্যক্রম শুরুর পর এটি কমে এসেছে। এখন সবাই বুঝেছে, যৌন হয়রানি করলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রীরা নিরাপদ হয়েছে। আমিও নিরাপদে আছি।’

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী। তিনি বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে ব্র্যাকের সংগঠন আছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য স্কুলে স্কুলে কমিটি করে যে কাজ করছে সেটিও প্রশংসনীয়। সব স্কুলে এটি করা গেলে আরও অনেক বেশি সুফল পাওয়া যাবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন পবার ইউএনও আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসেই আমরা যৌন হয়রানি ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিবেদন পাঠাই। এতে দেখছি, আগের চেয়ে অনেক বেশি যৌন হয়রানি কমেছে। সবাই সচেতন হলে এটি শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব।’

সভায় প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন কারিগরি ব্যবস্থাপক ইজাজ আহমেদ। সভা পরিচালনা করেন প্রকল্প কর্মকর্তা মিতা রানী সরকার। বক্তব্য দেন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজিয়া বেগম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিমুল বিল্লাহ সুলতানা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এমএমএন জহুরুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান, ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারের অপারেশন ম্যানেজার শামীম হাসান।