রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় | ছবি:সংগৃহীত

সংবাদদাতা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়: সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি ও সামাজিকভাবে হেনস্তার (শ্রেণি কক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা) অভিযোগকারী শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তারকে বহিষ্কারের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনার আট মাস পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর চিঠিটি পাঠানো হলেও বিষয়টি শুক্রবার প্রকাশ পায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহ্ আজম ও রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী ওই ছাত্রীকে বহিষ্কারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ এনে চলতি বছরের সব পরীক্ষা বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের কথা বলা হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সানজিদা আক্তার বলেন, ‘যৌন নির্যাতনের মামলা থেকে বাঁচতে আমার ওপর নকলের দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘নকল করার অভিযোগে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু যখন ঘটনা ঘটেছিল তখন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? এক বছর পর এসে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি অভিযোগ করার পর আমার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে ওই শিক্ষককে রক্ষা করতে।’

চিঠিতে বলা হয়েছে, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার (শিক্ষাবর্ষ ২০১৭-২০১৮) ৪র্থ বর্ষ স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা-২০২১ এর ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় নকল করার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতি বছরের সব পরীক্ষা বাতিল করে তাঁকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হলো। বহিষ্কারের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি পরবর্তী ৪র্থ বর্ষের সঙ্গে পুনঃভর্তি পূর্বক শ্রেণি কার্যক্রম ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এর আগে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি ও সামাজিকভাবে হেনস্তার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন বরাবর চিঠি দেন সানজিদা আক্তার। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি সভাপতি পিংকি রানী দে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুব্রত ভৌমিকের কাছেও অভিযোগ দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মার্চ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। পরে এ ঘটনার দ্রুত সমাধান চেয়ে গত ২৩ আগস্ট উপাচার্য বরাবর আরেকটি চিঠি দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি সভাপতি পিংকি রানী দে বলেন, ‘সানজিদা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছে। সেগুলো আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি তদন্ত করে গত ৩০ জুলাই উপাচার্য বরাবর প্রতিবেদন দাখিল দাখিল করেছি। তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়নি। যে কারণে সিন্ডিকেট সভায় ওই শিক্ষককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজম বলেন, ‘পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী সানজিদা আক্তারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি ও শ্রেণি কক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার যে অভিযোগ করা হয়েছিল তা তদন্তে প্রমাণিত হয়নি।’