গ্রেপ্তার পুত্রবধূ নাজমা খাতুন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়া (৮০) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃদ্ধার অসুস্থ মেয়ে সালমা খাতুনের চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করায় পুত্রবধূ নাজমা খাতুন ও নাতি আব্দুর রাজ্জাক রনী পরিকল্পনা করে শ্বাসরোধে মোমেনা বেওয়াকে হত্যা করে।
গত শনিবার পুত্রবধূ নাজমা খাতুন (৫৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে শুক্রবার ঢাকার শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ পিবিআইয়ের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়ার স্বামীর মৃত্যু পর পুত্রবধূ ও নাতিদের সঙ্গে উপজেলার দহকুলা গ্রামের বসবাস করতেন। বৃদ্ধ মোমেনা বেওয়ার নামে কিছু জমি ছিল। ওই জমি বিক্রি করা টাকা তাঁর অসুস্থ মেয়ে সালমা খাতুনের চিকিৎসায় ব্যয় করেন। এ ছাড়া পুত্রবধূ অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই দুটি ঘটনা নিয়ে পুত্রবধূ ও নাতিদের সঙ্গে বৃদ্ধা মনোমালিন্য হয়।
এরই জেরে বৃদ্ধাকে হত্যার পরিকল্পনা করে পুত্রবধূ ও নাতিরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৭ মে রাতে বৃদ্ধা মোমেনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পরনের শাড়ি দিয়ে ঘরের মধ্যে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে। পরে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় বৃদ্ধার মেয়ের জামাই মাহবুবুল আলম বুলু বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় বৃদ্ধ মোমেনা বেওয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পরে নিহতের আরেক নাতি আমিরুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দীর্ঘ ২ বছর ৯ মাস তদন্ত চলাকালে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নিহতের পুত্রবধূ নাজমা খাতুনকে ঢাকার শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।