স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুই মেয়রের মানুষের প্রতি কোনো মায়া-দয়া নেই: রিজভী

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য নেতারা। বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরের মালোপাড়া এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

প্রতিনিধি রাজশাহী: সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন দুই সিটি করপোরেশন কিছুই করেনি। আরে দুই সিটি মেয়র আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী তো একই গোয়ালের...! তাঁরা কী বুঝবেন। এঁদের কোনো মায়া–দয়া নেই মানুষের প্রতি। তাঁরা দুঃশাসনের মাধ্যমে তাঁদের স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান। আর চান বলেই মানুষের বাঁচামরার বিষয়ে তাঁদের কোনো মনোযোগ নেই।’

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরের মালোপাড়া এলাকায় ভুবন মোহন পার্কে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজশাহী মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আয়োজিত এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন রুহুল কবির রিজভী।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে ভূমিকা না রেখে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দাওয়াত পাক আর না পাক উনি ব্রিকসে যাচ্ছেন, দিল্লিতে যাচ্ছে। আরও অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ, ওনার পায়ের তলায় মাটি নেই। ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে মানুষ। ওষুধ নেই, চিকিৎসার সরঞ্জাম নেই, নিম্নমানের সরঞ্জাম। অথচ দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র উল্লাস করছেন, তাঁরা পিকনিকে যাচ্ছেন।’ রিজভী আরও বলেন, ‘যে সরকারকে জবাবদিহি করতে হয় না, ভোট পেতে হয় না, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই জীবনের মূল্য তারা দিতে চায় না। প্রধানমন্ত্রী শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছেন। ঢাকায় ইতিমধ্যে আট শর কাছাকাছি মানুষ মারা গেছেন। ঢাকা থেকে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে।’

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য নেতারা। বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরের মালোপাড়া এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

সাইবার নিরাপত্তা আইন আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কার্বন কপি মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘গতকাল সংসদে সাইবার সিকিউরিটি আইন পাস হয়েছে। এই আইনে সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ নির্মম শিকার হতে পারেন। এই আইন আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কার্বন কপি। এটি আরও নিষ্ঠুর, ভয়ংকর করা হয়েছে। এখানে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেল। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর থাকল না। ওদের লুটপাট, টাকা পাচার, ব্যাংক লুট, ৮০০ কোটি টাকা চুরির বিষয়ে কেউ যাতে কোনো কথা না বলতে পারে, কোনো প্রচার যাতে না করতে পারে, তাই সাইবার সিকিউরিটি আইন পাস করা হয়েছে।’

এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে ২০–এর নিচে নয়, ১০০টির ওপরে মামলা আছে। আমার নিজের নামেও ২০০টির ওপরে মামলা আছে। অনেক নেতার নামে ৪০০–এর বেশি মামলা। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে মামলা দিয়ে রাজনৈতিক তরঙ্গ, আন্দোলনকে কি থামানো যায়? থামানো যাবে না। এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে।’

সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান শেষে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুবিষয়ক প্রচারপত্র বিতরণ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, ওবায়দুর রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী, সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জি এম শফিউর রহমান প্রমুখ।