জাতিসংঘের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের (ইউএনডিএসএস) সহকারী মহাসচিব উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকা | ছবি: সংগৃহীত |
কূটনৈতিক প্রতিবেদক: মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রতিদিন অবনতি হচ্ছে। মাদক ও অস্ত্রের চোরাচালান, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে আরসাসহ অন্তত ১১টি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায়ই খুনের ঘটনা ঘটছে।
এমন এক প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের (ইউএনডিএসএস) সহকারী মহাসচিব উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকা বাংলাদেশে আসছেন।
সোমবার কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পাঁচ দিনের বাংলাদেশ সফরের সময় কক্সবাজার সফরে যাবেন। তিনি সেখানে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি শিবিরের পরিস্থিতি দেখভালের সঙ্গে যুক্ত জাতিসংঘের কর্মী এবং মানবিক সহায়তায় যুক্ত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন। এ সময় তিনি সেখানকার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি কেমন, সেটা সরেজমিনে জানা–বোঝার চেষ্টা করবেন।
জানা গেছে, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকা রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের পাশাপাশি ঢাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বিশেষ করে কক্সবাজারের শিবিরের নিরাপত্তা বেশ কিছুদিন ধরে ক্রমেই অবনতির দিকে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের দেখভালের বিষয়ে গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কক্সবাজারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের কোনো প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফরে আসেননি।
এ দিকে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের সফরটি কৌতুহলোদ্দীপক। কারণ, পশ্চিমা দেশ এবং জাতিসংঘ ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে আসছে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের নানা উদ্যোগের পরও কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের অবনতিশীল পরিস্থিতি ঠেকানো যাচ্ছে না। শিবিরে সক্রিয় আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনসহ (আরএসও) ১১টি সশস্ত্র গোষ্ঠী আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রতিনিয়ত সংঘাতে যুক্ত রয়েছে। গত ছয় বছরে শিবিরে অন্তত ১৭৬ জন খুন হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে রোহিঙ্গা শিবির থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি–বিদেশি অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ইয়াবা এবং আইসের মতো মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।