বগুড়াতে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে নাব্যতা ফেরানোর দাবি

বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে প্রতীকী নৌকা ভাসানো কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় করতোয়া নদীতে কাগজের নৌকা ভাসায় শিক্ষার্থীরা।  বগুড়া শহরের এসপি সেতু এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়া শহরের প্রাণ হিসেবে পরিচিত করতোয়া নদীর নাব্যতা ফেরানো ও দখল-দূষণ বন্ধের দাবিতে প্রতীকী নৌকা ভাসানো কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে রোববার দুপুরে শহরের মালতিনগরের এসপি ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বগুড়া জেলা শাখা।

কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে কবি ও কথাসাহিত্যিক বজলুল করিম বাহার বলেন, ‘দখল–দূষণে করতোয়া নদী এখন মৃতপ্রায়। ময়লা–আবর্জনার ভাগাড়। শহরের ফতেহ আলী ও চাষি বাজারে জবাই করা পশুর হাড়গোড়, নাড়িভুঁড়ি, ময়লা–আবর্জনা, পলিথিন, নোংরা পানি ফেলা হচ্ছে নদীতে। করতোয়া নদীর কারণেই বগুড়া শহরের গোড়াপত্তন হয়েছে। সেই নদী এখন ধ্বংসপ্রায়। করতোয়াকে হত্যার পেছনে প্রাকৃতিক কারণ যতটুকু, তার চেয়ে বেশি দায়ী মানুষ। করতোয়া নদীকে জীবন্ত দেখতে চাই।’

নৌকা ভাসানোর আগে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বগুড়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সানজিদা পারভিন বলেন, ‘করতোয়া নদীতে বছরজুড়ে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ দেখতে চাই। নৌকা চলাচল দেখতে চাই। কাগজের নৌকা ভাসিয়ে আমরা আমাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরেছি।’

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোকাব্বার হোসেন প্রামাণিক, বাপা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।

করতোয়ার দখল–দূষণ বন্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ২০১৫ সালে বগুড়ার জেলা প্রশাসক, পাউবো, পরিবেশ অধিদপ্তর, বগুড়া পৌরসভা, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ পাঠায়। কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বেলার পক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। শুনানির পর আদালত করতোয়া নদীতে সব ধরনের বর্জ্য ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বগুড়া পৌরসভাকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের খুলসিতে নির্মিত জলকপাট নির্মাণের ফলে পরিবেশগত প্রভাব নির্ণয় করে প্রতিবেদন দিতেও পাউবোকে নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের এ নির্দেশনার পর অবৈধ দখল উচ্ছেদে তৎপর হয় প্রশাসন। সীমানা পরিমাপ শেষে ২০১৯ সালের মার্চে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করতোয়ার দুই পাড়ে ২১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।