ইউএনএফপিএ’র সহায়তাপুষ্ট কক্সবাজার সদরের পিএম খালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবার চিত্র | ছবি: ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ কার্যালয়ের সৌজন্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক: হোপ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ায় কক্সবাজারে অন্যান্য অংশীদারদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। এতে শরণার্থীশিবিরের রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাশিশুদের স্বাস্থ্যসেবায় কোনো ধরনের ঘাটতি হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউএনএফপিএর আবাসিক প্রতিনিধি (কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ) ক্রিস্টিন ব্লুখোস।

ক্রিস্টিন ব্লুখোস বলেন, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জন্য অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মাতৃত্বকালীন সেবা ও মেয়েদের স্বাস্থ্যসেবা যথাযথভাবে প্রদানে যেন কোনো ঘাটতি না হয়, তা নিশ্চিতে ইউএনএফপিএ শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) এবং স্বাস্থ্য খাতবিষয়ক আন্তখাত সমন্বয় গ্রুপের (আইএসসিজে) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

ইউএনএফপিএ কক্সবাজারে অন্যান্য অংশীদারদের মাধ্যমে সেবা প্রদান কার্যক্রম জোরদার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির এবং তার বাইরে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

এক রোহিঙ্গা নারী বলেছিলেন, তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। হোপ ফিল্ড হসপিটাল ফর উইমেনে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সন্তান প্রসব ও অস্ত্রোপচার সেবা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় তিনি সন্তান প্রসব নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কারণ, ৮০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার শহরের হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ্য তাঁর নেই।

এ বিষয়ে ইউএনএফপিএর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, ইউএনএফপিএ উখিয়ার ক্যাম্প ৮–ই তে অবস্থিত একটি হাসপাতালে সপ্তাহে ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা জরুরি প্রসূতি সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গা শিবির ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারীর গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে পাঠানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ, এই হাসপাতালটিতে যথাযথভাবে মাতৃত্বকালীন সেবা দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং প্রসূতিসেবা পাওয়ার জন্য ৮০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার শহরে যেতে হবে বলে যে কথা বলা হয়েছে, তা সঠিক নয়।

ওই প্রতিবেদনে আশ্রয়শিবিরের আরেক বাসিন্দা বলেছিলেন, হোপ ফিল্ড হাসপাতালে সেবা না পেয়ে অনেক নারী ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ধাত্রীর মাধ্যমে সন্তান প্রসবে বাধ্য হচ্ছেন।

এ বিষয়ে ক্রিস্টিন ব্লুখোস বলেছেন, কক্সবাজারের শরণার্থীশিবিরে নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। সুতরাং অনেক নারী বাধ্য হয়ে ঘরে সন্তান প্রসব করছেন বলে যে কথা বলা হয়েছে, সেটা যৌক্তিক নয়।

ব্লুখোস আরও বলেন, আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে যে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কারণে হোপ ফাউন্ডেশনের কর্মীদের বেতনে যে প্রভাব পড়েছে, তার সমাধান করবে ইউএনএফপিএ।

স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আশ্বস্ত করে ক্রিস্টিন বলেন, ইউএনএফপিএ নিশ্চিত করছে যে হোপ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য অংশীদারদের মাধ্যমে সেবা প্রদানের কারণে কক্সবাজারে নারী ও মেয়েদের যেসব সেবা প্রদান করা হয়, তার ওপর কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।