পাবনার একটি ছাত্রীনিবাসে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সংবাদদাতা পাবিপ্রবি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। তাকে সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সব্বেজ টাওয়ারের ছাত্রী মেসে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সব্বেজ টাওয়ারে ছাত্রীরা ভাড়া নিয়ে মেস করে থাকেন। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে নেন পরিসংখ্যান বিভাগের রুকাইয়া খাতুন, সাদিয়া পারভিন সোমা, তাসলিমা, গুলনাহার, সুমাইয়া, সাকিলা, সুমাইয়া, লোকপ্রশাসন বিভাগের সায়েদা সুলতানা শাওন, ইংরেজি বিভাগের ইসরাত জাহান ইমুসহ আরও কয়েকজন।
এ সময় জ্যেষ্ঠ আপুরা তাকে ভবনের ছাদে নিয়ে ম্যানার শেখানোর নামে মানসিকভাবে হেনস্তা করেন। এভাবে রাত ১১টা পর্যন্ত এভাবে চলার পর হঠাৎ ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর আপুরা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। পরে চিকিৎসা শেষে তাকে রাতেই পুনরায় মেসে ফিরিয়ে আনা হয়।
ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি অনেক দিন থেকে অসুস্থ। কিন্তু কয়েক দিন ধরে বড় আপুরা বিভিন্নভাবে আমার দোষ ধরে যাচ্ছেন। আমার ব্যবহার ভালো না, সালাম দেই না, সম্মান করি না এভাবে নানা বিষয়ে দোষ ধরতে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘উনারা আমাকে মেসের ছাদে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে আমাকে ম্যানার শেখানোর নামে বকাঝকা করতে থাকেন। এরপর আমার শরীর খারাপ লাগলে আমি ওয়াশ রুমে যাই, কিন্তু উনারা আমাকে ওয়াশ রুমে থেকে আবার ছাদে নিয়ে যান। তখন আমি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি, পরে উনারা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।’
সব্বেজ টাওয়ার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
তবে হেনস্তার বিষয়টি অস্বীকার করে পরিসংখ্যান বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রুকাইয়া ইসলাম বলেন, ‘তাকে কোনোরকম মানসিকভাবে কোনো হেনস্তা করা হয়নি। আমরা শুধুমাত্র মেসের নিয়মকানুন জানানোর জন্য সব জুনিয়রকে ডেকেছিলাম। তার অসুস্থতার ব্যাপারে আমরা জানতাম না।’
মেস মালিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রাতে দশজন জুনিয়র শিক্ষার্থীকে মেসের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা ওপরে ডেকে নিয়েছিল। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকজন এসেছিল। সে একটু অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল আর কী।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরপরই আমি খোঁজ–খবর নিয়েছি এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। যেহেতু অভিযুক্তরা অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী, সে জন্য আমি তো তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি না। এ বিষয়ে আমি প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাকে জানিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এ রকম ঘটনা আমিও শুনেছি। ওই শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগামীকাল (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, তা জেনে পরে বলতে পারব।’