ভ্যান বিক্রি করে ছিনতাইয়ের নাটক সাজান বাগমারার তরুণ: পুলিশ

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি বাগমারা: আগের ভ্যান বিক্রির পর বাবার কাছ থেকে নতুন আরেকটি ভ্যান কিনে নেওয়ার জন্য ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছিলেন রাজশাহীর বাগমারার তরুণ মিঠুন কুমার প্রামাণিক (২৫)। ভ্যান বিক্রির টাকায় বাড়ি থেকে ঢাকা যাওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। মিঠুন কুমারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এমন তথ্যই জানিয়েছে পুলিশ।

মিঠুন কুমার রাজশাহীর বাগমারার আউচপাড়া ইউনিয়নের সাইধারা গ্রামের হিরেন্দ্রনাথের ছেলে। শারীরিক প্রতিবন্ধী মিঠুন পেশায় ভ্যানচালক। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার মচমইল এলাকা থেকে ‘অসুস্থ অবস্থায়’ মিঠুনকে উদ্ধার করেন বাগমারার তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা। চিকিৎসা শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় মিঠুন দাবি করেছিলেন, তাঁকে অচেতন করে ব্যাটারিচালিত ভ্যান ছিনিয়ে নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা।

রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সনাতন চক্রবর্তী বলেন, সংবাদপত্রের মাধ্যমে মিঠুন কুমার প্রামাণিকের ভ্যান ছিনতাইয়ের বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। এরপর পুলিশ ভ্যানটি উদ্ধার ও অপরাধীকে শনাক্তের জন্য তৎপরতা শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার আগের দিন শুক্রবার মিঠুনের অবস্থান ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে। তিনি ওই এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে কথাও বলেন। ঢাকায় কীভাবে যাওয়া যাবে এবং কত টাকা খরচ হবে, তা ওই ব্যক্তির কাছ থেকে জেনে নেন তিনি।

পরে মিঠুন ১২ হাজার টাকায় তাঁর অটোভ্যানটি বিক্রি করে দেন। এর মধ্যে সাত হাজার টাকা নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট এবং অবশিষ্ট পাঁচ হাজার টাকা নিজের কাছে রাখেন। বাবার কাছ থেকে আরেকটি নতুন ভ্যান কিনে নেওয়ার জন্য মিঠুন কুমার অচেতন করে ভ্যান ছিনতাইয়ের নাটক সাজান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। এ জন্য তিনি উপজেলার তাহেরপুরের পূর্বপরিচিত এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে অসুস্থতার ভান করে শুয়ে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়।

এই বিষয়ে মিঠুন ও তাঁর স্বজনেরা কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এর আগে প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক মিঠুন কুমার প্রামাণিক বলেছিলেন, গত শুক্রবার বিকেলে দুই ব্যক্তি যাত্রী সেজে তাঁর ভ্যানে উপজেলার মচমইলে আসার পথে কোনো এক স্থানে নাক–মুখে কিছু স্পর্শ করে অজ্ঞান করে ভ্যান ছিনিয়ে নেয় এবং তাঁকে ফেলে যায়। পরের দিন চেতনা ফিরে পাওয়ার পর এক লোক মোটরসাইকেলে তাঁকে উদ্ধার করে তাহেরপুরে এক পরিচিত ব্যক্তির বাড়ির সামনে রেখে চলে যান।