এশিয়া কাপের ট্রফি নিয়ে ভারতের উল্লাস | ছবি: এএফপি

খেলা ডেস্ক: ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা ইনিংসেই।

মোহাম্মদ সিরাজের তোপে দাসুন শানাকার দল ৫০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর অপেক্ষা ছিল ভারত কত ব্যবধানে আর কত দ্রুত জিতবে। শুবমান গিল আর ঈশান কিষানের উদ্বোধনী জুটি সেই অপেক্ষাটা দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি। দুই তরুণ ভারতকে জয়ের দরকারি রান এনে দিয়েছেন মাত্র ৬.১ ওভারেই।

১০ উইকেটের যে জয় ভারতকে এনে দিয়েছে এশিয়া কাপের অষ্টম শিরোপা। এ নিয়ে এই টুর্নামেন্টে ১৬ আসরের অর্ধেকবারই ট্রফি হাতে তুলল ভারত।

মাত্র ২১.৩ ওভার স্থায়ী ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার অনুকূলে ছিল শুধু টস। যে টসে জিতলে রোহিত শর্মাও ব্যাটিং নিতেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ব্যাটসম্যানরা যখন অসহায় হয়ে পড়েন, তখন আর আগে–পরে ব্যাটিংয়ে কী আসে–যায়!

শুরুটা করেন জশপ্রীত বুমরা। তৃতীয় বলেই কুশল পেরেরাকে উইকেটের পেছনে লোকেশ রাহুলের ক্যাচ বানান ডানহাতি এ পেসার। তখনো বোঝা যায়নি শ্রীলঙ্কার সামনে কী আসছে। আরেক প্রান্তে বোলিং করতে আসা সিরাজ নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই তুলে নেন পাতুম নিশাঙ্কার উইকেট। শুরু হয় অনবদ্য এক বোলিং ধ্বংসযজ্ঞের। ওই ওভারেরই তৃতীয় বলে সাদিরা সামারাবিক্রমা, চতুর্থ বলে চারিত আসালাঙ্কা আর ষষ্ঠ বলে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে তুলে নেন সিরাজ। পরের ওভারে এসে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক শানাকাকে বোল্ড করে পূর্ণ করেন ব্যক্তিগত পাঁচ উইকেট, শ্রীলঙ্কা হারায় ১২ রানে ৬ উইকেট।

এই বিপর্যয় থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিস ও দুশান হেমন্ত সপ্তম উইকেটে ২১ রান যোগ করলে ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে (৩৫, জিম্বাবুয়ে) অলআউটের শঙ্কা থেকে বাঁচে তাঁরা। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে সর্বোচ্চ দুটি ইনিংসও খেলেন এ দুজনই (মেন্ডিস ১৭, হেমন্ত ১৩)। মেন্ডিসকে বোল্ড করে এই জুটিও ভাঙেন সিরাজ। আর ২.২ ওভার বল করে শ্রীলঙ্কার শেষ ৩ উইকেট তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়া।

শ্রীলঙ্কার ইনিংস থামে মাত্র ১৫.২ ওভারে। আইসিসির টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ওভারের ইনিংস (২০১৭ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৩.৫ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে)।

এশিয়া কাপের আগের ম্যাচগুলোতে ওপেনিং করলেও রোহিত আজ গিলের সঙ্গে কিষানকে পাঠিয়ে দেন। দুজনে মিলে প্রথম তিন ওভারে তুলে ফেলেন ৩৪ রান। শেষ পর্যন্ত সপ্তম ওভারের প্রথম বলে আসে জয়সূচক রান। মাত্র ১২৯ বলে শেষ হয় এশিয়া কাপের ফাইনাল।

ওয়ানডে ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বনিম্ন বলে ম্যাচ শেষ হওয়ার ঘটনা। ২০২০ সালে নেপাল–যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচে হয়েছিল ১০৪ বল, ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কা–জিম্বাবুয়ে ম্যাচে ১২০ বল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ১৫.২ ওভারে ৫০ (মেন্ডিস ১৭, হেমন্ত ১৩; সিরাজ ৬/২১, পান্ডিয়া ৩/৩)।

ভারত: ৬.১ ওভারে ৫১/০ (গিল ২৭*, কিষান ২৩*)।

ফল: ভারত ১০ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ সিরাজ।

টুর্নামেন্টসেরা: কুলদীপ যাদব।