সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

ফরিদপুর প্রতিনিধি: রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘আমরা রেলব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি জেলাকে রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করা। মিটারগেজ ও ব্রডগেজের জায়গায় এক পদ্ধতির রেলপথ চালু করা। সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইন করা। রেলকে নদী ও সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করা। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ–বাহিত রেল চালু করে রেলের উন্নয়ন ঘটানো। 

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনে সেনাবাহিনী ও রেলপথ মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রেলমন্ত্রী পরীক্ষামূলক (ট্রায়াল রান) চলাচলের একটি ট্রেনে করে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পার হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গার বামনকান্দায় ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনে এসে পৌঁছান।

সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, এ রেলের সঙ্গে এই এলাকার মানুষের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর রেলকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে রেল মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন। তিনি আরও বলেন, আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা-ঢাকা পথে রেলের উদ্বোধন করবেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই এ পথে বাণিজ্যিকভাবে রেল চলাচল শুরু হবে।

ভবিষ্যতে ভাঙ্গা থেকে শুরু করে পটুয়াখালী, বরিশাল, পায়রা হয়ে পর্যটন শহর কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল চলবে বলে উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, ভাঙ্গা-ঢাকা পথে রেল চলাচল বাড়বে। অনেক ট্রেনের পথ পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু দিয়ে নেওয়া হবে।

রেলপথের নির্মাণকাজের অগ্রগতির বিষয়ে নূরুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেলপথের ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৮০ শতাংশ, ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৭৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্প ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। রেলওয়ে দেশের সম্পদ, জনগণের সম্পদ বলে উল্লেখ করেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, রেলপথে চলাচলে ও পণ্যের পরিবহনে সময় ও টাকা বাঁচবে। এতে জনগণ আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

বিরোধী দলের ভূমিকা সব সময় বিপরীতমুখী উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রেল বানাই, তারা রেলে আগুন দেয়। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে রেলের কোনো বিকল্প নেই।’

পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম ট্রেনটির লোকোমাস্টার হিসেবে ছিলেন এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার ছিলেন এম এ হোসেন। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করেছেন আনোয়ার হোসেন।

রেলমন্ত্রী ট্রেনে করে ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনে আসার পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বেলুন ওড়ানো হয় এবং আতশবাজি ফোটানো হয়।

পরীক্ষামূলক ট্রেনযাত্রায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের সফর সঙ্গী ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, রেলপথসচিব হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।