প্রথম আলোকে রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি রাজশাহী: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। ভিসা নীতি একটি বিচ্ছিন্ন বিষয়। তবে আমি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের একটি কথায় উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন, ‘ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যমও আসবে। আমাদের দেশের গণমাধ্যম অত্যন্ত স্বাধীন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে। আমাদের গণমাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী। গণমাধ্যম সব সময় গণতন্ত্রের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।’
মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীর ধারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কাকে ভিসা দেবে না দেবে, সেটা তাদের ব্যাপার। এটি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কাকে ১০ বছর দেবে, কাকে ৫ বছর দেবে, কাকে ১ বছর দেবে, কাকে দেবে না, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। দেখলেন না ভারতে কীভাবে সেলফি তুলল জো বাইডেন। আবার কীভাবে নিউইয়র্কে নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাল। সেখানেও ছবি তুলল, পুতুলও ছিলেন। ছবিই তো কথা বলে।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আপনারা কাকে ভিসা দেবেন না দেবেন, এতে কিছু যায় আসে না। আপনারা কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকে ভিসা দেবেন নাকি দেবেন না, বিএনপির কাকে দেবেন নাকি দেবেন না, এতে আমরা কিছু মনে করি না। এটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু কেন গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি কার্যকর হবে, সেটা আমার বোধগম্য নয়। গণমাধ্যমের সঙ্গে সাংবাদিক, কলামিস্ট থেকে যাঁরা যুক্ত আছেন, তাঁরা মনে করছেন, এটি আমাদের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ। অন্য কোনো দেশের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ করা সমীচীন নয়। এটি গণমাধ্যমকর্মীরা, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মেনে নিতে পারেন না। আশা করব, তাঁরা বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি আর বিএনপি বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমরা কৃষককে স্বল্প মূল্যে সার দিয়েছি আর সারের জন্য বিক্ষোভ করায় কৃষককে বিএনপি গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা স্কুলে স্কুলে বিনা মূল্যে বই দিয়েছি, বিএনপি স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছে। এটা হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘বিএনপি বলেছে, আগামী মাসে ফাইনাল খেলা। আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি ফাইনাল খেলার জন্য। কোথায় খেলবেন, আমরা সেখানে যাব। যুবলীগ প্রস্তুত আছে। আমরা আওয়ামী লীগ যাব, না যুবলীগকে পাঠাব। আমাদের সেকেন্ড টিম পাঠাব। প্রয়োজনে মহিলা আওয়ামী লীগকেও পাঠাব। ওদের সঙ্গে আগে খেলেন। তারপর আওয়ামী লীগ প্রয়োজনে খেলবে। যুব মহিলা লীগ যদি যেতে চায়, যুবলীগ তাদের নিয়ে যেতে পারে। তবে ফাইনাল খেলার আগে বিএনপির খেলোয়াড়েরা তাঁদের দলে থাকবে কি না, নাকি দল বদল করে ফেলবেন, সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন। ফাইনালের আগেই যদি দল বদল করে ফেলে তাহলে ফাইনাল খেলতে পারবেন না।’
এ সময় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, আজকের চেহারা আর ১৫ বছরের আগের চেহারা এক নয়। আগে মানুষ খেতে পারত না, এখন ডায়েটিং করে শুকানোর জন্য। এখন ডাল-ভাত, মাছ-ভাত থেকে মাংস–ভাতে পরিবর্তন হয়েছে। এই যে পরিবর্তন এটি কোনো জাদুর কারণে নয়, এটি শেখ হাসিনার জাদুকরী ভূমিকার কারণে হয়েছে।