প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া | ছবি: বাসস

বাসস, নিউইয়র্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও উজরা জেয়া বিভিন্ন বৈশ্বিক-আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা।’

উজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাঁরা রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবিকা নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেন উজরা জেয়া। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করার আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা উচিত। অন্যথায় এ অঞ্চল নিরাপত্তা–হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ, রোহিঙ্গারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান ও মাদক ব্যবসা। রোহিঙ্গারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ, তাদের প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক সমর্থনও চেয়েছেন শেখ হাসিনা।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও উজরা জেয়া বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন। উজরা জেয়া বলেন, তাঁরা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন চান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, তাঁরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

অক্টোবরে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্‌-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘আগামী সাধারণ নির্বাচনে আমরা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাই।’

গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতুও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়া তিনি মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন।