সম্প্রতি সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক টিনশেড ভবনসংলগ্ন সরকারি জমিতে জোর করে টিনের ঘর তোলেন রফিকুল ইসলাম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক টিনশেড ভবনের তালা ভেঙে রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি দখল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে টিনশেড ভবন ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়ায় তাঁর শ্যালক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মীদের হুমকি দিয়েছেন।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের ঝিঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক। হুমকিদাতা আবু বক্কর সিদ্দিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চৌগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী। রফিকুল ইসলামের শ্যালক হলেন আবু বক্কর সিদ্দিক।

চৌগ্রাম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আবাসিক টিনশেড ভবন ও এর পাশের জমি রাতারাতি বেদখল হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। তবে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টো তাঁকে বদলি করার হুমকি দিয়েছেন রফিকুল ইসলাম ও তাঁর আত্মীয় আবু বক্কর সিদ্দিক।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম সম্প্রতি চৌগ্রাম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক টিনশেড ভবনসংলগ্ন সরকারি জমিতে জোর করে একটি টিনের ঘর তোলেন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তাঁকে ওই ঘর ভেঙে নেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি তা না করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তালা ভেঙে দখল করে সেখানে বসবাস শুরু করেন। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ১৮ সেপ্টেম্বর রফিকুল ইসলামকে আবাসিক ভবন ও স্থাপনা ছেড়ে দেওয়ার জন্য লিখিত নোটিশ দেন। নোটিশে তাঁকে সাত দিনের মধ্যে দখল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় তাঁকে দখলচ্যুত করতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়। এই নোটিশ দেওয়ার পর রফিকুল ইসলাম, তাঁর শ্যালক আবু বক্কর সিদ্দিক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বদলি করার ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এতে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

চৌগ্রাম ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক টিনশেড ভবন দখল করে বসবাস শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

অভিযোগের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় বসবাস করছেন। দখল সূত্রে এই জায়গা তাঁর। আর এখান থেকে তাঁদের কেউ সরাতেও পারবে না।

এ ব্যাপারে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তিনি রফিকুল ইসলামের শ্যালক বটে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ এস এম আলমাস বলেন, ‘আমি সিংড়ায় নতুন যোগদান করেছি। তবু চৌগ্রাম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক টিনশেড ভবন ও এর পাশের জায়গা দখলের খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়েছি। আমি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। বাধ্য হয়ে তাঁকে নোটিশ দিয়েছি। নোটিশ পেয়ে তিনি উপকেন্দ্রের চিকিৎসককে হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।’