আওয়ামী লীগের লোগো |
প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: সম্মেলনের দুই বছর পার হলেও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন মেলেনি। এ নিয়ে পাবনা জেলা কমিটির নেতাদের কাছে বারবার ধরনা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
পক্ষান্তরে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবিত কমিটিতে দলের অনেক ত্যাগী, নির্যাতিত পরীক্ষিত নেতাকর্মীর নাম বাদ পড়ারও অভিযোগ উঠেছে। পদবঞ্চিত এমন কয়েকজন নেতা পাবনা জেলার নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
দীর্ঘ বিরতি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা মিলে বেশ উৎকণ্ঠার মধ্যেই আলহাজ্ টেক্সটাইল উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো | ফাইল ছবি |
দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্যদিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান ও বিশেষ অতিথি সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল এ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি ও পাবনা-৪ আসনের এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
সম্মেলন শেষে শুধুমাত্র দুটি পদে কাউন্সিলরদের ভোটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। এতে সভাপতি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নায়েব আলী বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পৌর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। রাতে কাউন্সিল অধিবেশন শেষে কমিটির মাত্র দু'টি পদে নাম ঘোষনা করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। এরপর প্রায় বছরখানেক কমিটির সভাপতি সাধারন সম্পাদকের নির্দেশনায় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে প্রস্তাবিত কমিটির মাধ্যমে দলের কার্যক্রম চলছে।
নায়েব আলী বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ মিন্টু (বাম থেকে) | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জানা গেছে, কমিটি গঠনের প্রায় একবছর পর ঈশ্বরদীতে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সভা শেষে সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস ৭২ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। পরে ওই কমিটি অনুমোদনের জন্য পাবনায় পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও নানা অজুহাতে উপজেলা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে অনেকে অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রস্তাবিত উপজেলা কমিটির এক নেতা বলেন, “বুঝতে পারছি না, ঠিক কী কারণে আমাদের কমিটি অনুমোদন হচ্ছে না। প্রায় সব জায়গায় তো কমিটি পাশ হইছে, শুধু ঈশ্বরদী পাশ হয় নাই"।
তিনি বলেন, “আমার শোনা কথা, কেন্দ্র থেকে পাবনা জেলা কমিটিকে বলা হয়েছিল কিছু 'কাটছাট করে ঈশ্বরদীর কমিটি গঠন করার জন্য। এর কিছুদিন পাবনা জেলা কমিটি গঠন ও অনুমোদন হয়। সেখানে ঈশ্বরদীর বেশ কয়েকজনকে অর্ন্তভূক্ত হয়। তবে তিনি দাবি করেন, এবারই প্রথম ভোটের মাধ্যমে উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। কিন্তু সেই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যদি ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করতেন- তবে পথচলা। কমিটি অনুমোদন হয়ে যেত”।
ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস বলেন, কমিটি অনুমোদন প্রদানের জন্য আমি ও দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু চেষ্টা করে যাচ্ছি। জেলা কমিটিকেও বলেছি দ্রুত অনুমোদনের জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
মুঠোফোনে কল করা হলে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল জানান, সামনে নির্বাচন। বিষয়গুলো নিয়ে জেলার সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ঈশ্বরদীসহ আরও কয়েকটি কমিটি অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছি।