যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলী গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ ১০টি নদ-নদীসহ চলনবিলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে পানি বাড়তে থাকায় প্লাবিত হয়েছে জেলার পাঁচ উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো। ইতিমধ্যে এসব এলাকায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, বসতবাড়িতে পানি উঠেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এখানে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৯০ মিটার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার।
পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলী গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছেন। এতে ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হেকমত আলী বলেন, গতকাল পর্যন্ত উপজেলার ২ হাজার ১৯০টি পরিবারের অন্তত সাড়ে ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব পরিবারের তালিকা তৈরি করে জেলায় পাঠানো হয়েছে।
সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী বলেন, হঠাৎ যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাড়িঘর ও ফসলি জমি প্লাবিত হচ্ছে। এরই মধ্যে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে সিরাজগঞ্জ সদর ও কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলে ২০৩ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রোপা আমন ১৫৫ হেক্টর, সবজি ১৫ হেক্টর, আউশ ১২ হেক্টর, বীজতলা ৮ হেক্টর, কলা ৩ হেক্টর ও আখ ১০ হেক্টর রয়েছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও শাহজাদপুর উপজেলার তালিকা প্রণয়ন না হওয়ায় এসব উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, হঠাৎ আসামে প্রচুর বৃষ্টির কারণে যমুনার পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে পাঁচটি উপজেলায় বন্যার ঝুঁকি রয়েছে। এই উপজেলাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে সহায়তার চাহিদা পাঠাতে বলা হয়েছে। চাহিদা এলে সে অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হবে।