রাজশাহী মেডিকেলে ডেঙ্গুতে প্রথম শিশুর মৃত্যু, ভর্তি ৪৯

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৩ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে এটাই এ হাসপাতালে প্রথম শিশুর মৃত্যুর ঘটনা। আজ শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

 ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া শিশুর নাম তাওহীদ ইসলাম। তার বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অন্য ১০ জনের মধ্যে ৮ জনের বয়সই ৬০ বছরের অধিক ছিল। একজনের ৫০ বছরের নিচে ছিল। আরেকজনের বয়স ছিল ২০ বছর।

এদিকে হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে ১৮২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ। আজ শনিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানান, এই প্রথম হাসপাতালে এক শিশু মারা গেল। তাকে সর্বাত্মক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এই রোগীর কোনো ভ্রমণ ইতিহাস ছিল না। রোগীটি মাত্র এক দিনের জ্বরেই কাবু হয়ে পড়ে। জ্বরের সঙ্গে তার তীব্র মাথাব্যথা ছিল। এতে দুর্বল হয়ে পড়লে ওই রোগীটিকে ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা তিনটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রোগীর অবস্থা ধীরে ধীরে আরও নাজুক হয়ে পড়ে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ২৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে শনিবার ভোরে মারা যায়।

হাসপাতাল থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ৯৭ জন রোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে রাজশাহীর স্থানীয় রোগী ছিল ১ হাজার ৩৬৯। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১ হাজার ৯০৪ জন। মারা গেছেন ১১ জন রোগী। প্রথম রোগী মারা যান চলতি বছরের ৮ জুলাই। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৮২ জন রোগী। আর এই ১৮২ জন রোগীর মধ্যে ১৭৩ জনই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, হাসপাতালে সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি রোগী ভর্তি আছেন। প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা আসছেন। শুধু তা–ই নয়, যেসব এলাকায় বড় বড় হাসপাতাল আছে, সেসব এলাকা থেকেও এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে চিকিৎসা দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবীর বলেন, চলতি বছর রাজশাহী বিভাগে এখন পর্যন্ত ২৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।