![]() |
সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ৫২ বিদেশি সাইক্লিস্ট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: সীমান্তের জিরো লাইন পেরিয়ে প্রবেশ করেছে সারি সারি সাইকেল। দীর্ঘ সারিতে থাকা বিভিন্ন বয়সী সাইকেল আরোহীদের মুখে জয় বাংলা স্লোগান। শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বার্তা নিয়ে ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের আহমেদনগর থেকে প্রায় ৩৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ৫২ জনের সাইক্লিস্ট দল।
গান্ধীআশ্রম ট্রাস্টের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মহাত্মা গান্ধীর ১৫৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সাইকেল র্যালি নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ভারত ও ইংল্যান্ডের ৫২ জন সাইক্লিস্ট।
শুক্রবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে তারা প্রবেশ করেন। শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আবারও র্যালি শুরু করে রাজশাহী, ইশ্বরদী, কুষ্টিয়া, টুঙ্গিপাড়া, শরিয়তপুর, চাঁদপুর হয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে গান্ধী আশ্রমে গিয়ে শেষ হবে এই র্যালি।
ইমিগ্রেশন পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর সাইক্লিস্টদের ফুল দিয়ে বরণ করেন স্থানীয় সাংসদ ও গান্ধী আশ্রমের কর্মকর্তারা। পরে বিকেলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে রওনা দিয়ে রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারে পৌঁছায়।
বাংলাদেশের গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট ও ভারতের স্নেহালয়া থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা জানায়, এই সাইকেল র্যালি দুই দেশের ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে পৌঁছে দিবে অনন্য উচ্চতায়।
ভারত-বাংলাদেশ গুডউইল সাইকেল র্যালির সমন্বয়কারী ড. গিরিস কুলকার্নি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে নানারকম অশান্তি ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারতের দুই দেশের ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে এই সাইকেল র্যালির মাধ্যমে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মহাত্মা গান্ধী এবং বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও চিন্তাভাবনা তরুণদের মাঝে ছড়িতে দিতে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পর্কে বলা হয়। তার মানবিকতা, মহানুভবতা, দেশপ্রেম সম্পর্কে জানতে পারি। আমরা যখন বাংলাদেশে এসেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পর্কে আরও জানতে পারব। আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহাত্মা গান্ধীকে আরও জানতে, তাদের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হতেই এই সফর করছি।’
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের ট্রাস্টি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাস বলেন, ‘গান্ধীজী জীবদ্দশায় একবার বাংলাদেশের নোয়াখালী এসেছিলেন, প্রায় ৭৫ বছর পূর্তি হচ্ছে তার। অন্যদিকে, আগামী ০২ অক্টোবর তার ১৫৫ তম জন্মবার্ষিকী। দুই বিশেষ সময়কে একসঙ্গে করে আমরা একটি উৎসব আয়োজন করেছি। আমাদেরকে এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে ভারতের মহারাষ্ট্রের স্নেহালয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর শান্তি, অহিংসা, সম্প্রতির বানী পৌঁছে যাবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, ‘ভারতের মহাত্মা গান্ধী ও বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও শান্তির বার্তা বিনিময়ে এই সাইকেল র্যালি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যে ৫২ জন সাইক্লিস্ট বাংলাদেশে এসেছে তাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। এর মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে আদর্শ ও চিন্তাধারা তা তাদের মাঝে পৌঁছে যাবে।’
সাইক্লিস্ট দলে রয়েছে ৫০ জন ভারতীয় ও ২ জন ইংল্যান্ডের নাগরিক। বাংলাদেশের গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট ও ভারতের স্নেহালয়া এই সাইকেল র্যালির আয়োজন করে। এই ৫২ জন সাইক্লিস্ট আগামী ০২ অক্টোবর নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মহাত্মা গান্ধীর ১৫৫তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিবে।