রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: ১৬ বছর আগের করা প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ ওরফে চাঁদের কারাদণ্ডের আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। এ নিয়ে  মঙ্গলবার সকালে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে নগরের মালোপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান ওরফে মিনু। তিনি এই রায়কে ‘ফরমায়েশি রায়’ বলেছেন।

এর আগে গত রোববার বিকেলে অর্থ আত্মসাতের মামলায় আবু সাঈদকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১–এর বিচারক মারুফ আল্লাম। একই সঙ্গে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আবু সাঈদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণে বলা হয়েছে, জেলার চারঘাট উপজেলার বামুনদিঘি চকঝিকরা টেকনিক্যাল স্কুলে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে মামলার বিবাদীরা পরস্পর যোগসাজশে ১৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ঘটনাটি ২০০৭ সালের। এ ঘটনায় উপজেলার চকগোচর গ্রামের মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তি আদালতে এ মামলা করেন। তখন আবু সাঈদ শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘চাঁদ ভাইয়ের দোষ, তিনি সত্য কথা বলেন। চাঁদ ভাইয়ের দোষ, তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। তিনি রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি প্রার্থী হয়েছিলেন। তাই ওই আসনের সরকারদলীয় এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জোর করে মামলা করিয়েছেন, মামলার রায় করিয়েছেন। এরাই হচ্ছে জাতির শত্রু।’

আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে এই ফরমায়েশি রায় দেওয়ার জন্য প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাঁর স্ত্রী যেকোনো সময় মারা যেতে পারেন, তাঁর মা অসুস্থ। আবু সাঈদ চাঁদের ফরমায়েশি রায়ের বিরুদ্ধে ও তাঁকে মুক্তির দাবিতে আগামী ১ তারিখে মহানগর ও জেলা বিএনপি মিলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ করব।’

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ | ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, সদস্য দেবাশীষ রায়, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশীদ, জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

চলতি বছরের ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে একটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ পুঠিয়া থানায় হওয়া একটি মামলায় আবু সাঈদকে ২৫ মে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য জেলায় আবু সাঈদের নামে ২৭টি মামলা হয়। এসব মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে ৭৩টি মামলা চলমান বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।