ধর্ষণ | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি শাজাহানপুর: বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার ফুলকোট গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী টিফিনের ফাঁকে বাড়িতে খাবার খেতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন স্থানীয় আব্দুল করিম (৫৫)। এক বোবা কিশোর তা দেখে ফেলায় রক্ষা পেয়েছে মেয়েটি। আব্দুল করিম ওই গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে। বাড়িতে স্ত্রী ও চার সন্তান রয়েছে আব্দুল করিমের।

গত রোববার বেলা দেড়টার দিকে ওই বিদ্যালয়সংলগ্ন একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় ওই শিক্ষার্থীর পরিবার। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ঘটনার পর থেকে পলাতক আব্দুল করিম।

মেয়েটি বলে, ‘সেদিন বিদ্যালয়ে টিফিনের ছুটি দিয়েছে তাই আমি বাড়িতে খেতে আসছিলাম। রাস্তায় আগে থেকে ওত পেতে ছিল আব্দুল করিম। স্থানীয় বাবুলের বাড়ির সামনে দিয়ে আসার সময় আমার মুখ চেপে ধরে বাবুলের বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায় করিম। সে সময় ওই বাড়িতে বাবুলের বোবা কিশোর ছেলে ছাড়া কেউ ছিল না। আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম।’

মেয়েটি বলে, ‘প্রতিবন্ধী ওই বোবা কিশোর স্থানীয় নুর নাহার এবং তাছলিমাকে ডেকে এনে আমাকে রক্ষা করে।’

মেয়েটির মা বলেন, ‘ঘটনার পর আমি স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের জানিয়েছি। পরদিন সোমবার দুপুরে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ এখনো তদন্ত করতে আসে নাই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ডাকে করিম আসে নাই।’

নুর নাহার ও তাছলিমা জানান, ঘটনার সময় হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। বাইরে কেউ ছিল না। প্রতিবন্ধী ওই কিশোর হাত নেড়ে বিষয়টি তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে। তখন তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে করিম ও মেয়েটিকে পান। মেয়েটিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। করিমও ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

আজ বাবুলের বাড়ি গিয়ে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। বাবুলের প্রতিবন্ধী কিশোর ছেলে ইশারা দিয়ে আজকের পত্রিকার কাছে ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

স্থানীয়রা জানান, ছয় মাস আগে ১১ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন করিম। চিৎকার লোকজন জমা হলে মেয়েটি রক্ষা পায়। এর আগে ৭০ ও ৬০ বছর বয়সী ভিক্ষুক দুই বোন করিমের আক্রমণের শিকার হন। এর আগেও একই গ্রামের বৃদ্ধা (৭৫) এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে (১২) যৌন নির্যাতন করেন করিম।

অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল করিমের মা বলেন, ‘আমার ছেলে ভালো। গ্রামের লোকজন যা বলছে তা মিথ্যা কথা। ভুল করে এই মেয়েকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল। এই ঘটনার পর থেকে করিম কোথায় আছে, তা আমরা কেউ জানি না।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুন নুর বাদল বলেন, ‘২৪ সেপ্টেম্বর টিফিনের সময় ঘটনাটি ঘটে। স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের দায়দায়িত্ব শিক্ষকদের থাকে, এটা ঠিক। ঘটনাটি মীমাংসার জন্য প্রথমে স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধি এবং করিমকে ডেকেছিলাম। কিন্তু তাঁরা আসে নাই। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। মেয়ের পরিবার থানায় অভিযোগ দিয়েছে।’

জানতে চাইলে শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। করিমকে গ্রেপ্তারে আমরা সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি।’