নওগাঁর মান্দা উপজেলায় অটোরিকশা-বাসশ্রমিকদের সংঘর্ষের পর সড়কের ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেন বাসশ্রমিকেরা। শুক্রবার বিকেলে মান্দার ফেরিঘাট এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁর মান্দা উপজেলায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার শ্রমিকদের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ২টি বাস ও ১৫টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে উপজেলার সাবাইহাট ও ফেরিঘাট এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর থেকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে বাস ও তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ আছে।

নওগাঁ জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রশাসন ও মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও অটোরিকশা চালকেরা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছিল। এ নিয়ে সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ বেলা আড়াইটার দিকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে মান্দার সাবাইহাট বাজার এলাকায় সিএনজিচালক ও মালিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুটি বাস ভাঙচুর করেন। এ সময় বাস দুটির চালক ও তাঁর সহকারীকে মারধর করা হয়। পরে বাসশ্রমিকেরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর জন্য মান্দার ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক শ্রমিক সমিতি সাবাইহাট শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁ বাস মালিক সমিতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন মান্দার চৌদ্দমাইল ও ফেরিঘাট এলাকায় অবৈধভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। এ নিয়ে অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিকেরা প্রতিবাদ করলে গত ২৯ আগস্ট মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন তাঁদের মারধর করেন। আজ দুপুরে ফেরিঘাট থেকে রাজশাহীতে যাওয়ার সময় উপজেলার সাবাইহাট বাজারের কাছে চৌদ্দমাইল এলাকায় একটি অটোরিকশা থামিয়ে এর চালককে মারধর করেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। পরে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় বাসশ্রমিকেরা আবারও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও চালকদের ওপর হামলা চালান। এ সময় ১৫-১৬টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। হামলায় অন্তত ১৫ জন অটোরিকশাশ্রমিক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন শফিকুল ইসলাম।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে অটোশ্রমিকেরা সাবাইহাট বাজার এলাকায় দুটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হয়ে অটোশ্রমিকদের ওপর হামলা ও অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। বেলা তিনটার দিকে ফেরিঘাট এলাকায় আত্রাই নদের ওপর নির্মিত সেতুর পূর্ব পাশে ও সেতুর পশ্চিম পাশে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুই পাশে রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান অবরোধ সৃষ্টি করেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন।

এ বিষয়ে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক কাজী আজ বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ চলছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা করেনি।