সড়কের পানি পেরিয়ে কেউ নিউমার্কেটের ভেতরেই ঢুকতে পারছেন না। ২২ সেপ্টেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ডুবে যায়। জলমগ্ন এসব সড়কে আটকা পড়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহান নগরবাসী।

পানিতে তলিয়ে থাকা রাস্তায় কোথাও কোথাও বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে, কোথাও কোথাও আগুন লেগেছে—এমন খবরও পাওয়া যায়। আজ শুক্রবারও দুর্ভোগ কমেনি। নিউমার্কেটসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা এখনো পানির নিচে ডুবে আছে।

আজ সকাল থেকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা এখনো পানির নিচে।

নীলক্ষেত থেকে আজিমপুর সড়কে কোমরসমান পানি জমে আছে। ২২ সেপ্টেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কোথাও কোথাও কোমরসমান পানি। রাজধানীর নিউমার্কেটের ভেতর ও সামনের সড়ক পুরোটাই পানির নিচে ডুবে আছে। নীলক্ষেতের সামনের সড়কে পানি জমে থাকার কারণে তেমন কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। তবে সাধারণ মানুষ রিকশা ও ভ্যানে করে ওই সড়ক পারাপার হচ্ছেন। রিকশার পাদানি ও ভ্যানের পাটাতন পর্যন্ত ডুবে থাকছে সড়কে জমে থাকা পানিতে।

সড়কে পানিতে নেমে প্রায় ডুবে আছে এক কিশোর। নীলক্ষেত থেকে আজিমপুর সড়ক। ২২ সেপ্টেম্বর  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিউমার্কেটের ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে, আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নিউমার্কেটে সকাল ১০টার পর থেকেই শুরু হয় মানুষের ভিড়। কিন্তু আজ সড়কের পানি পেরিয়ে কেউ নিউমার্কেটের ভেতরেই ঢুকতে পারছেন না।

কোনো কোনো ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মী কোনো রকমে ভিজে দোকানের সামনে গিয়ে বসে আছেন। দোকান খুলবেন কীভাবে, তা বুঝতে পারছেন না। তবে নিউমার্কেটের উল্টো দিকে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে দু-একটি দোকান খোলা দেখা গেলেও সেখানে যাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই।

ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশের গাউছিয়া, ধানমন্ডি হকার্স, বদরুদ্দোজা মার্কেটের বিক্রেতাদের দোকান থেকে পানি বের করতে দেখা গেছে। তাঁদের অনেক কাপড় ভিজে গেছে। বস্তায় থাকা কাপড় বের করে সড়কের পাশে রেখে তা পরিষ্কার করতেও দেখা গেছে অনেককে।

দোয়েল চত্বর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সড়কে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আছে। ২২ সেপ্টেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিউমার্কেটের ভেতরসহ এই সড়কে পানি জমে থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাত ও নিউমার্কেটের ভেতরে থাকা হকাররা। তাঁদের অনেকের জিনিসপত্র সব ভিজে গেছে। বর্তমানে সেসব অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ারও কোনো উপায় নেই।

সড়তে হাঁটার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। ২২ সেপ্টেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নীলক্ষেত থেকে আজিমপুর সড়কে কোমরসমান পানি জমে আছে। এই সড়কে আজ বেলা ১১টার দিকে বেশ কিছু প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যানবাহন না পেয়ে মানুষ রিকশা ও ভ্যানে করে পানি পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। আবার পর্যাপ্ত রিকশা-ভ্যান না পাওয়ায় অনেককে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

দোয়েল চত্বর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সড়কে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আছে। ওই সড়কে পানি জমে না থাকলেও ডাল ভেঙে থাকায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পেছনে ঢাকা নার্সিং কলেজের ভেতরেও হাঁটুসমান পানি জমে আছে।

মেয়র হানিফ উড়ালসড়ক থেকে নামার জায়গা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের অংশের সড়ক সকাল ১০টা পর্যন্ত পানির নিচে ছিল। ফুটপাত ছুঁই ছুঁই সেই পানি দুই পাশের দোকানিরা সেচে বের করার চেষ্টা করছেন।

সাধারণ মানুষ রিকশা ও ভ্যানে করে সড়ক পারাপার হচ্ছেন। নীলক্ষেত থেকে আজিমপুর সড়ক। ২২ সেপ্টেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এদিকে ধানমন্ডির বায়তুত তাওয়াব আবাসিক এলাকার কিছু সড়কে বেলা ১১টার দিকেও পানি জমা দেখা গেছে। বসুন্ধরা শপিং মলের পেছনের সড়কে এখনো হাঁটুর ওপর পানি। সেখানকার বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। কেউ কেউ কোনো রকমে দোকান খুললেও সেখানে স্বভাবিকভাবে যাওয়ার উপায় নেই।